“মাষ্টার মশাই, বাড়ী যাই?”
“যাও।”
সকাল বেলাটা তাহার এইরূপেই কাটে। কিন্তু দুপুরবেলার কাজটা একটু ভিন্ন প্রকৃতির। চাকুরির যাহাতে উপায় হয়, এ জন্য ব্রজবাবু অনুগ্রহ করিয়া দুই-একজন ভদ্রলোকের নামে খানকতক পত্র দিয়াছিলেন। সুরেন্দ্রনাথ এইগুলিকে পকেটে করিয়া বাহির হইয়া পড়ে। সন্ধান করিয়া তাহাদের বাড়ির সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হয়। দেখে, কত বড় বাড়ী, কয়টা জানালা, বাহিরে কতগুলি ঘর, দ্বিতল কি ত্রিতল, সম্মুখে কোন ল্যাম্প-পোষ্ট আছে কি না! তাহার পর সন্ধ্যার পূর্ব্বেই ফিরিয়া আসে।
কলিকাতায় আসিয়াই সে কতকগুলা পুস্তক ক্রয় করিয়াছিল, বাড়ী হইতেও কতকগুলা লইয়া আসিয়াছিল, এখন সেইগুলা সে গ্যাসের আলোকে অধ্যয়ন করিতে থাকে। ব্রজবাবু কাজকর্ম্মের কথা জিজ্ঞাসা করিলে, হয় চুপ করিয়া থাকে, না হয়, বলে, ভদ্রলোকদিগের সহিত সাক্ষাৎ হয় না।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ
আজি চারি বৎসর হইল, ব্রজরাজবাবুর পত্নীবিয়োগ হইয়াছে— বুড়া বয়সের এ দুঃখ বুড়াতেই বোঝে। কিন্তু সে কথা যাউক— তাঁহার আদরের কন্যা মাধবী দেবী যে এই তার ষোল বৎসর বয়সেই স্বামী হারাইয়াছে— ইহাই ব্রজরাজের শরীরের অর্দ্ধেক রক্ত শুষিয়া লইয়াছে। সাধ করিয়া ঘটা করিয়া তিনি মেয়ের বিবাহ দিয়াছিলেন—