ভুলিয়া গেল যে, আপনার জন্য তাহাকে বিগত জীবনের কোন একটি দিনও ভাবিতে হইয়াছিল, বা পরে ভাবিতে হইবে!
জামা, কাপড়, জুতা, ছাতি, ছড়ি যাহা কিছু প্রয়োজন, সমস্তই তাহার কক্ষে প্রচুর আছে। রুমালটি পর্য্যন্ত তাহার জন্য সযত্নে কে যেন সাজাইয়া রাখিয়া গিয়াছে। প্রথমে কৌতূহল হইত, সে জিজ্ঞাসা করিত, “এ সব কোথা হইতে আসিল?” উত্তর পাইত, “বড়দিদি পাঠাইয়া দিয়াছেন।” জলখাবারের থালাটি পর্য্যন্ত দেখিলে সে আজকাল বুঝিতে পারে, ইহাতে বড়দিদির সযত্নস্পর্শ ঘটিয়াছে।
অঙ্ক কষিতে বসিয়া একদিন তাহার কম্পাসের কথা মনে পড়িল; —প্রমীলাকে কহিল, “প্রমীলা! বড়দিদির কাছ থেকে কম্পাস নিয়ে এস।”
কম্পাস লইয়া বড়দিদিকে কাজ করিতে হয় না, ইহা তাহার নিকট ছিল না; কিন্তু বাজারে তখনই সে লোক পাঠাইয়া দিল। সন্ধ্যার সময় বেড়াইয়া আসিয়া সুরেন্দ্রনাথ দেখিল, তাহার টেবিলের উপর প্রার্থিত বস্তু পড়িয়া রহিয়াছে। পরদিন সকালে প্রমীলা কহিল, “মাষ্টার-মহাশয়, কাল দিদি ঐটে পাঠিয়ে দিয়েছেন।”
তাহার পর মধ্যে মধ্যে সে এমন এক-আধটা জিনিস চাহিয়া বসিত যে, মাধবী সেজন্য বিপদে পড়িয়া যাইত। অনেক অনুসন্ধান করিয়া তবে প্রার্থনা পূর্ণ করিতে হইত। কিন্তু কখনও সে বলে নাই, “দিতে পারিব না!”
কিংবা কখনও সে হঠাৎ হয়ত প্রমীলাকে কহিল, বড়দিদির নিকট হইতে পাঁচখানা পুরাতন কাপড় লইয়া এস; ভিখারীদের দিতে হইবে। নূতন পুরাতন বাছিবার অবসর মাধবীর সব সময় ২