লইয়াছে,– তোমাদের পত্র লিখিব আর কখন্? এখন যদি তোমার শীঘ্র আসা হয়, তাহা হইলে, এই অকর্ম্মণ্য লোকটীকে দেখাইয়া দিব। এমন অকেজো, অন্যমনস্ক লোক, তুমি জন্মে দেখ নাই। খাইতে দিলে খায়, না দিলে চুপ করিয়া উপবাস করে। হয়ত সমস্ত দিনের মধ্যে, তাহার মনেও পড়ে না যে, তাহার আহার হইয়াছে কি না! একদিনের জন্যও সে আপনাকে চালাইয়া লইতে পারে না। তাই ভাবি এমন লোক সংসারে বাহির হয় কেন! শুনিতে পাই, তাঁহার মাতাপিতা আছেন— কিন্তু আমার মনে হয়, তাঁদের পাথরের মত শক্ত প্রাণ! আমি ত বোধ হয়, এমন লোককে চক্ষের আড়াল করিতে পারিতাম না!”
মনোরমা তামাসা করিয়া উত্তর লিখিল,— “তোমার পত্রে অন্যান্য সংবাদের মধ্যে জানিতে পরিলাম যে, তুমি বাড়ীতে একটি বাঁদর পুষিয়াছ,— আর তুমি তার সীতা-দেবী হইয়াছ। কিন্তু তবু একটু সাবধান করিয়া দিতেছি। ইতি মনোরমা।”
পত্র পড়িয়া মাধবীর মুখ ঈষৎ রঞ্জিত হইয়া উঠিল। সে উত্তর লিখিল,— “তোমার পোড়া-মুখ, তাই কাহাকে কি ঠাট্টা করিতে হয়, জানো না।”
মাধবী জিজ্ঞাসা করিল, “প্রমীলা, তোমার মাষ্টার-মশায়ের চশমা কেমন হয়েচে?”
প্রমীলা বলিল, “বেশ।”
“কেমন ক’রে জান্লে?”
“মাষ্টার-মশায় সেই চশমা চোখে দিয়ে, বেশ বই পড়েন— তাই জান্লুম।”