মাধবী কহিল, “তিনি নিজে কিছু বলেননি?”
“কিছু না।”
“একটি কথাও না? ভাল হয়েছে, কি মন্দ হয়েছে, কিছু না?”
“না, কিছু না।”
মাধবীর সদা-প্রফুল্ল মুখ যেন মুহূর্ত্তের জন্য মলিন হইল;— কিন্তু তখনি হাসিয়া কহিল, “তোমার মাষ্টারকে বলে দিয়ো, তিনি যেন আর হারিয়ে না ফেলেন।”
“আচ্ছা, বলে দেব।”
“দূর পাগ্লি, তা কি বলতে আছে! তিনি হয় ত, কিছু মনে কর্বেন।”
“তবে কিছুই বল্ব না?”
“না।”
শিবচন্দ্র মাধবীর দাদা। মাধবী একদিন তাহাকে ধরিয়া বলিল, “দাদা, প্রমীলার মাষ্টার রাতদিন কি পড়ে, জান?”
শিবচন্দ্র বি, এ ক্লাসে পড়ে; ক্ষুদ্র প্রমীলার শিক্ষক-শ্রেণীর লোকগুলা, তাহার গ্রাহ্যের মধ্যেই নহে। উপেক্ষা করিয়া বলিল “নাটক নভেল পড়ে, আর কি পড়িবে?” মাধবীর বিশ্বাস হইল না। প্রমীলাকে দিয়া একখানা পুস্তক লুকাইয়া আনিয়া দাদার হাতে দিয়া বলিল, “নাটক নভেল ব’লে ত বোধ হয় না!”
শিবচন্দ্র আগাগোড়া কিছু বুঝিল না, শুধু এইটুকু বুঝিল যে, ইহার এক বিন্দুও তাহার জানা নাই এবং এখানি গণিতের পুস্তক।
ভগিনীর নিকট সম্মান হারাইতে তাহার প্রবৃত্তি হইল না।