কহিল, “এটা অঙ্কের বই; ইস্কুলে নীচের ক্লাসে পড়া হয়।” বিষণ্ণমুখে মাধবী প্রশ্ন করিল, “কোন পাশের পড়া নয়? কলেজের বই নয়?”
শুষ্ক হইয়া শিবচন্দ্র বলিল, “না, কিছুই নয়।” কিন্তু সেইদিন হইতে শিবচন্দ্র ইচ্ছাপূর্ব্বক কখনও সুরেন্দ্রের সম্মুখে পড়িত না। মনে মনে ভয় ছিল, পাছে সে কোন কথা জিজ্ঞাসা করিয়া ফেলে, পাছে সব কথা প্রকাশ হইয়া পড়ে, এবং পিতার আদেশে তাহাকে প্রাতঃকালটা প্রমীলার সহিত একসঙ্গে এই মাষ্টারটার নিকট খাতা পেন্সিল লইয়া বসিয়া থাকিতে হয়।
কিছুদিন পরে মাধবী পিতাকে কহিল, “বাবা আমি দিনকতকের জন্য কাশী যাব।”
ব্রজবাবু চিন্তিত হইয়া উঠিলেন, “সে কি মা? তুমি কাশী গেলে এ সংসারের কি হইবে?” মাধবী হাসিয়া বলিল, “আমি আবার তো আসিব, একেবারে যাইতেছি না ত।”
মাধবী হাসিল। পিতার চক্ষে কিন্তু জল আসিতেছিল। মাধবী বুঝিতে পারিল, এরূপ কথা বলা অন্যায় হইয়াছে। সামলাইয়া লইবার জন্য কহিল, “শুধু দিনকতকের জন্য বেড়াইয়া আসিব।”
“তা যাও– কিন্তু মা, সংসার চল্বে না।”
“আমি ছাড়া সংসার চল্বে না?”
“চল্বে না কেন মা, চল্বে! হাল ভাঙ্গিয়া গেলে স্রোতের মুখে নৌকাখানা যেমন ক’রে চলে— এও তেমনি চল্বে।”
কিন্তু, কাশী যাওয়া তাহার নিতান্ত প্রয়োজন। সেখানে তাহার