“আপনি আর পড়াতে পার্বেন না?”
“না। আমার পড়াতে ভাল লাগে না।”
মাধবী ভিতর হইতে কহিল, “জিজ্ঞাসা কর বিন্দু, কেন এতদিন তবে মিছা কথা ব’লে এখানে আছেন?” বিন্দু তাহাই কহিল। শুনিয়া সুরেন্দ্রর “প্রব্লেমের” জাল একেবারে ছিন্ন হইয়া গেল; একটু দুঃখিত হইল, একটু ভাবিয়া বলিল, “তাই ত, বড় ভুল হয়েচে।”
“এই চার মাস ধ'রে ক্রমাগত ভুল?”
হ্যাঁ, তাই ত হয়েচে দেখ্চি– তা’ কথাটা আমার তত মনে ছিল না।”
পরদিন প্রমীলা পড়িতে আসিল না, সুরেন্দ্রেরও তত মনে হইল না। তার পর-দিনও আসিল না— সেদিনও অমনি গেল!
তৃতীয় দিবস প্রমীলাকে না দেখিতে পাইয়া, সুরেন্দ্রনাথ একজন ভৃত্যকে কহিল, “প্রমীলাকে ডেকে আন।”
ভৃত্য ভিতর হইতে ফিরিয়া আসিয়া কহিল, “ছোটদিদি আর আপনার কাছে পড়্বেন না।”
“কার কাছে তবে পড়্বে?”
ভৃত্য বুদ্ধি খরচ করিয়া বলিল, “অন্য মাষ্টার আস্বে।”
বেলা তখন নয়টা বাজিয়াছিল। সুরেন্দ্রনাথ কিছুক্ষণ ভাবিয়া চিন্তিয়া দুই তিন খানা বই বগলে চাপিয়া উঠিয়া দাঁড়াইল। চশমাটা খাপে পূরিয়া টেবিলের উপর রাখিয়া দিল, তারপর ধীরে ধীরে চলিয়া গেল।
ভৃত্য কহিল, “মাষ্টারবাবু, এ সময়ে কোথায় যাচ্চেন?”
৩