পারি! মাধবীকে দেখিয়া বড় ভয় হয়,— সে আমার আজন্মের ধারণা ওলট্পালট্ করিয়া দিয়াছে। আমাকেও বেশী বিশ্বাস করিও না— শীঘ্র আসিয়া লইয়া যাইও—”
তাহার স্বামী উত্তর লিখিলেন—
“যাহার রূপ আছে, সে দেখাইবেই। যাহার গুণ আছে, সে প্রকাশ করিবেই। যাহার হৃদয়ে ভালবাসা আছে, যে ভালবাসিতে জানে,— সে ভাল বাসিবেই। মাধবীলতা রসাল বৃক্ষ অবলম্বন করে, ইহা জগতের রীতি— তুমি আমি কি করিতে পারি? তোমাকে আমি খুব বিশ্বাস করি— সেজন্য চিন্তিত হইও না।”
মনোরমা স্বামীর পত্র মাথায় রাখিয়া মনে মনে তাঁহার চরণ-উদ্দেশে প্রণাম করিয়া লিখিল— “মাধবী পোড়ামুখী— বিধবাকে যাহা করিতে নাই, সে তাই করিয়াছে। মনে মনে আর একজনকে ভালবাসিয়াছে।”
পত্র পাইয়া মনোরমার স্বামী মনে মনে হাসিলেন। তাহার পর কৌতুক করিয়া লিখিলেন, “মাধবী পোড়ামুখী তাহাতে আর সন্দেহ নাই, কেন না বিধবা হইয়া মনে মনে আর একজনকে ভালবাসিয়াছে। তোমাদের রাগ হইবার কথা— বিধবা হইয়া কেন সে তোমাদের সধবার অধিকারে হাত দিতে গিয়াছে! আমি যতদিন বাঁচিয়া থাকিব, তোমার কোন চিন্তা নাই— এমন সুবিধা কিছুতেই ছাড়িও না! এই অবসরটুকুর মধ্যে পরম আরামে আর একজনকে মনে মনে ভালবাসিয়া লইও। কিন্তু কি জানো মনোরমা, তুমি আমাকে আশ্চর্য্য করিতে পার নাই, আমি একবার একটা লতা দেখিয়াছিলাম, সেটা আধ ক্রোশ ধরিয়া ভূমিতলে লতাইয়া লতাইয়া