অবশেষে একটা বৃক্ষে জড়াইয়া উঠিয়াছিল। এখন তাহাতে কত পাতা, কত পুষ্পমঞ্জরী! তুমি যখন এখানে আসিবে, তখন দুজনে সেটিকে দেখিয়া আসিব।”
মনোরমা রাগ করিয়া তাহার উত্তর দিল না।
কিন্তু মাধবীর চোখের কোণে কালী পড়িয়াছে, প্রফুল্ল মুখ ঈষৎ গম্ভীর হইয়াছে, কাজকর্ম্মে তেমন বাঁধনি নাই— একটু ঢিলারকমের হইয়াছে। সকলকে যত্ন আত্মীয়তা করিবার ইচ্ছা তেমনি আছে, বরং বাড়িয়াছে— কিন্তু সব কাজগুলা আর তেমন মনে থাকে না— মাঝে মাঝে ভুল হইয়া যায়।
এখনো সবাই কহে বড়দিদি, এখনো সবাই সেই কল্পতরুটির পানে চাহিয়া থাকে, হাত পাতে, অভীষ্ট ফল পায়; কিন্তু গাছ আর তেমন সরস সতেজ নাই। পুরাতন লোকগুলির মাঝে মাঝে আশঙ্কা হয়— পাছে শুকাইয়া যায়।
মনোরমা নিত্য আসে, অন্যান্য কথা হয়— শুধু একথা আর হয় না। মাধবী দুঃখিত হয়, মনোরমা তাহা বুঝিতে পারে। আর এসকল কথার আলোচনা যত না হয়, ততই ভাল। হতভাগী যদি ভুলিতে পারে, মনোরমা একথাও ভাবে।
সুরেন্দ্রনাথ আরাম হইয়া পিতার সহিত বাটী চলিয়া গিয়াছে। বিমাতা তাঁহার যত্নটা একটু কম করিতে আরম্ভ করিলেন, তাই সুরেন্দ্র শরীরে একটু আরাম পাইয়াছে, কিন্তু শরীর বেশ সারিতে পায় নাই— অন্তরে একটু ব্যথা আছে। রূপ যৌবনের আকাঙ্ক্ষা পিপাসা এখনো তাহার মনে উদয় হয় নাই,— এ সব সে জানিত না। পূর্ব্বের মত এখনো সে অন্যমনস্ক, আত্মনির্ভর-শূন্য। কিন্তু