তাহার পর, একদিন প্রভাতে, বাঁশী বাজাইয়া ঢাকের প্রচণ্ড শব্দ করিয়া, কাঁশীর খন্ খন্ আওয়াজে সমস্ত গ্রাম পরিপূরিত করিয়া, সুরেন্দ্রনাথ বিবাহ করিয়া আসিল।
সপ্তম পরিচ্ছেদ
প্রায় পাঁচ বৎসর অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে। রায়-মহাশয়ও আর নাই, ব্রজরাজ লাহিড়ীও স্বর্গে গিয়াছেন। সুরেন্দ্রের বিমাতা স্বর্গীয় স্বামিদত্ত সমস্ত সম্পত্তি, টাকাকড়ি লইয়া পিতৃ-ভবনে বাস করিতেছেন।
আজকাল সুরেন্দ্রনাথের যেমন সুখ্যাতি, তেমনি অখ্যাতি। একদল লোক কহে, এমন বন্ধুবৎসল; উদারচেতা, অমায়িক, ইয়ার-প্রতিপালক জমিদার আর নাই। অন্য দল কহে, এমন উৎপীড়ক, অত্যাচারী জমিদার এ তল্লাটে কখন জন্মায় নাই।
আমরা জানি এ দুইটা কথাই সত্য। প্রথমটি সুরেন্দ্রনাথের জন্য সত্য, দ্বিতীয়টা তাঁহার ম্যানেজার মথুরনাথবাবুর জন্য সত্য।
সুরেন্দ্রনাথের বৈঠকখানায় আজকাল খুব একদল ইয়ার বসিতেছে; তাহারা পরম সুখে সংসারের সাধ মিটাইয়া লইতেছে। পান-তামাক, মদ-মাংস– কোন ভাবনা তাহাদিগকে করিতে হয় না। চাহিতেও হয় না– আপনি মুখে আসে।
ম্যানেজার মথুরবাবুর ইহাতে খুব উৎসাহ। খরচ যোগাইতে তিনি মুক্ত-হস্ত। কিন্তু এজন্য জমিদারকে ক্ষতিগ্রস্ত হইতে হয়