“কেন কাঁদি? অন্তর্য্যামী জানেন। তাও বুঝিতে পারি যে তুমি অযত্ন কর না– তোমারও মনে ক্লেশ আছে– তুমি আর কি কর্বে?” তাহার পর চক্ষু মুছিয়া বলিল, “আমি আজীবন যাতনা পাই, তাতে ক্ষতি নাই, কিন্তু তোমার কি কষ্ট যদি জান্তে পারি–”
সুরেন্দ্রনাথ তাহাকে কাছে টানিয়া লইয়া, স্বহস্তে তাহার চক্ষু মুছিয়া দিয়া সস্নেহে কহিল, “তা’ হ’লে কি কর, শান্তি?”
এ কথার কি আর উত্তর আছে? শান্তি ফুলিয়া ফুলিয়া কাঁদিতে লাগিল!
বহুক্ষণ পরে শান্তি কহিল, “তোমার শরীরও আজ কাল ভাল নেই।”
“আজ কেন, পাঁচ বছর থেকে নেই। যে দিন কলকাতায় গাড়ী-চাপা পড়েছিলাম, বুকে পিঠে আঘাত পেয়ে একমাস শয্যায় পড়েছিলাম, সেই অবধি শরীর ভাল নেই। সে ব্যথা কিছুতেই গেল না, মাঝে মাঝে নিজেই আশ্চর্য্য হই, কেমন করে বেঁচে আছি।”
শান্তি তাড়াতাড়ি স্বামীর বুকে হাত দিয়া বলিল, “চল, দেশ ছেড়ে আমরা কলিকাতায় যাই, সেখানে ভাল ডাক্তার আছে–”
সুরেন্দ্র সহসা প্রফুল্ল হইয়া উঠিল, “তাই চল। সেখানে বড়দিদিও আছেন।”
শান্তি বলিল, “তোমার বড়দিদিকে আমারও বড় দেখ্তে ইচ্ছে করে, তাঁকে আন্বে ত?”
“আন্ব বই কি!” তাহার পর ঈষৎ ভাবিয়া বলিল, “নিশ্চয় আস্বেন, আমি ম’রে যাচ্ছি শুন্লে–”
৪