ছিল। স্ত্রীর আদেশে সুরেন্দ্রের বাহির-বাটীতে পর্য্যন্ত যাওয়া নিষিদ্ধ হইয়াছে! ডাক্তার মহাশয়ের পরামর্শ ও উপদেশ শান্তি প্রাণপণে খাটাইয়া তুলিবার আয়োজন করিয়াছে।
এইমাত্র সে কাছে বসিয়া রাঙা ফিতা দিয়া কাগজের বাণ্ডিল বাঁধিতেছিল। সুরেন্দ্রনাথ একখানা কাগজ হইতে মুখ তুলিয়া সহসা ডাকিলেন, “শান্তি!”
শান্তি কোথায় গিয়াছিল– কিছুক্ষণে ফিরিয়া আসিয়া বলিল, “ডাক্ছিলে?” “হাঁ, আমি একবার কাছারি-ঘরে যাব।”
“না। কি চাই, বল, আমি আনিয়ে দিচ্চি।” “কিছু চাই না, একবার মথুরবাবুর সঙ্গে দেখা কর্ব।” “তাঁকে ডাকিয়ে পাঠাই,– তোমাকে যেতে হবে না। কিন্তু, এমন সময় তাঁকে কেন?” “ব’লে দেব যে, অগ্রহায়ণ মাস থেকে তাঁকে আর কাজ করতে হবে না।”
শান্তি বিস্মিত হইল; কিন্তু সন্তুষ্ট হইয়া জিজ্ঞাসা করিল– “তাঁর অপরাধ?”
অপরাধ যে কি, তা এখন ঠিক বল্তে পার্চি না,– কিন্তু বড় বাড়াবাড়ি কর্চেন।” তাহার পর আদালতের সার্টিফিকেট্ ও কয়েকখানা কাগজ-পত্র দেখাইয়া কহিলেন, “এই দেখ, গোলাগাঁয়ে একজন বিধবার ঘর-বাড়ী সমস্ত বেনামি নীলামে খরিদ ক’রে নিয়েচে। আমাকে একবার জিজ্ঞাসাও করেনি।”
শান্তি দুঃখিত হইয়া কহিল, “আহা বিধবা? তবে এ কাজটা ভাল হয়নি– কিন্তু বিক্রি হ’ল কেন?”
“দশ বৎসরের খাজনা বাকি ছিল; সুদে-আসলে দেড়-হাজার টাকার নালিশ হয়েছিল।”