নবীন
ভরে দাও, একেবারে ভরে দাও গো, ‘প্যালা ভর ভর লায়ী রে।’ পূর্ণের উৎসবে দেওয়া আর পাওয়া, একেবারে একই কথা। ঝর্নার এক প্রান্তে কেবলই পাওয়া অভ্রভেদী শিখরের দিক থেকে, আর-এক প্রান্তে কেবলই দেওয়া অতলস্পর্শ সমুদ্রের দিক-পানে। এই ধারার মাঝখানে শেষে বিচ্ছেদ নেই। অন্তহীন পাওয়া আর অন্তহীন দেওয়ার নিরবচ্ছিন্ন আবর্তন এই বিশ্ব। আমাদের গানেও সেই আবৃত্তি, কেননা, গান তো আমরা শুধুকেবল গাই নে, গান যে আমরা দিই। তাই গান আমরা পাই।
গানের ডালি ভরে দে গাে উষার কোলে-
আয় গো তোরা, আয় গাে তােরা, আয় গাে চলে।
চাঁপার কলি চাঁপার গাছে
সুরের আশায় চেয়ে আছে,
কান পেতেছে নতুন পাতা, গাইবি বলে।
কমলবরন গগন-মাঝে
কমলচরণ ঐ বিরাজে।
ঐখানে তাের সুর ভেসে যাক,
নবীন প্রাণের দেশে যাক,
ঐ যেখানে সােনার আলাের দুয়ার খােলে॥
মধুরিমা, দেখো দেখো, চন্দ্রমা তিথির পর তিথি পেরিয়ে আজ তার উৎসবের তরণী পূর্ণিমার ঘাটে পৌঁছিয়ে দিয়েছে। নন্দনবন থেকে কোমল আলোর শুভ্র সুকুমার পারিজাতস্তবকে তার ডালি ভরে আনল। সেই ডালিখানিকে ওই কোলে নিয়ে বসে আছে কোন্ মাধুরীর মহাশ্বেতা। রাজহংসের ডানার মতো তার লঘু মেঘের শুভ্র বসনাঞ্চল স্রস্ত হয়ে পড়েছে ওই আকাশে, আর তার বীণার রুপোর তন্তুগুলিতে অলস অঙ্গুলিক্ষেপে থেকে থেকে গুঞ্জরিত হচ্ছে বেহাগের তান।
১৫৯