বনবাণী
নিবিড় অমা-তিমির হতে
বাহির হল জোয়ারস্রোতে
শুক্লরাতে চাঁদের তরণী।
ভরিল ভরা অরূপ ফুলে,
সাজালাে ডালা অমরাকুলে
আলাের মালা চামেলিবরণী—
শুক্লরাতে চাঁদের তরণী।
তিথির পরে তিথির ঘাটে
আসিছে তরী দোলের নাটে,
নীরবে হাসে স্বপনে ধরণী।
উৎসবের পশরা নিয়ে
পূর্ণিমার কূলেতে কি এ
ভিড়িল শেষে তন্দ্রাহরণী-
শুক্লরাতে চাঁদের তরণী॥
দোল লেগেছে এবার। পাওয়া আর না-পাওয়ার মাঝখানে এই দোল। এক প্রান্তে মিলন, আর-এক প্রান্তে বিরহ, এই দুই প্রান্ত স্পর্শ করে করে দুলছে বিশ্বের হৃদয়। পরিপূর্ণ আর অপূর্ণের মাঝখানে এই দোলন। আলোতে ছায়াতে ঠেকতে ঠেকতে রূপ জাগছে জীবন থেকে মরণে, বাহির থেকে অন্তরে। এই ছন্দটি বাঁচিয়ে যে চলতে চায় সে তো যাওয়া-আসার দ্বার খোলা রেখে দেয়। কিন্তু, ওই-যে হিসাবি মানুষটা দ্বারে শিকল দিয়ে আঁক পাড়ছে, তার শিকল নাড়া দাও তোমরা। ঘরের লোককে অন্তত আজ এক দিনের মতো ঘর-ছাড়া করো।
ওরে গৃহবাসী, তোরা খোল্ দ্বার খোল্
লাগল-যে দোল।
১৬০