পাতা:বনবাণী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৯০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বনবাণী

সাজি থেকে যা-কিছু ঝরে ঝরে পড়ছে কুড়িয়ে নেব, বনের মর্মর, বকুলের গন্ধ, পলাশের রক্তিমা- আমার বাণীর সূত্রে সব গেঁথে, বেঁধে দেব তার মণিবন্ধে। হয়তো আবার আর-বসন্তেও সেই আমার-দেওয়া ভূষণ প’ড়েই সে আসবে। আমি থাকব না, কিন্তু কী জানি, আমার দানের ভূষণ হয়তো থাকবে ওর দক্ষিণ হাতে।

ফাগুনের নবীন আনন্দে

দ্বিতীয় পর্ব

বেদনা কী ভাষায় রে
মর্মে মর্মরি গুঞ্জরি বাজে।
সে বেদনা সমীরে সমীরে সঞ্চারে,
চঞ্চল বেগে বিশ্বে দিল দোলা।
দিবানিশা আছি নিদ্রাহরা বিরহে,
তব নন্দনবন-অঙ্গন-দ্বারে, মনােমােহন বন্ধু,
আকুল প্রাণে
পারিজাতমালা সুগন্ধ হানে।

 বিদায়দিনের প্রথম হওয়াটা এবার উৎসবের মধ্যে নিশ্বসিত হয়ে এখনো কোকিল ডাকছে, এখনো বকুলবনের সম্বল অজস্র, এখনো আম্রমঞ্জরীর নিমন্ত্রণে মৌমাছিদের আনাগোনা, কিন্তু তবু এই চঞ্চলতার অন্তরে অন্তরে একটা বেদনা শিউরিয়ে উঠল। সভার বীণা বুঝি নীরব হবে, পথের একতারায় এবার সুর বাঁধা হচ্ছে। দূর দিগন্তের নীলিমায় দেখা যায় অশ্রুর আভাস, অবসানের গোধূলিছায়া নামছে।

চলে যায় মরি হায় বসন্তের দিন

 হে সুন্দর, যে কবি তোমার অভিনন্দন করতে এসেছিল তার ছুটির দিন এল। তার প্রণাম তুমি নাও। যে গানগুলি এতদিন গ্রহণ করেছ সেই তার আপন গানের বন্ধনেই সে বাঁধা রইল তোমার দ্বারে; তোমার উৎসবলীলায় সে চিরদিন রয়ে গেল তোমার সাথের সাথি। তোমাকে

১৯০