গ্রন্থপরিচয়; নবীন
সে তার সুরের রাখী পরিয়েছে; তার চিরপরিচয় তোমার ফুলে ফুলে, তোমার পদপাতকম্পিত শ্যামল শষ্পবীথিকায়।
বসন্তে বসন্তে তােমার কবিরে দাও ডাক
ওর ভয় হয়েছে, সব কথা বলা হল না বুঝি, এ দিকে বসন্তর পালা তো সাঙ্গ হয়ে এল। ওর মল্লিকাবনে এখনি তো পাপড়িগুলি সব পড়বে ঝরে, তখন বাণী পাবে কোথায়। ত্বরা কর্ গো, ত্বরা কর্। বাতাস তপ্ত হয়ে এল, এই বেলা রিক্ত হবার আগে তোর শেষ অঞ্জলি পূর্ণ করে দে; তার পরে আছে করুণ ধূলি, তার আঁচলে সব ঝরা ফুলের বিরাম।
যখন মল্লিকাবনে প্রথম ধরেছে কলি
সুন্দরের বীণার তারে কোমলগান্ধারে মিড় লেগেছে। আকাশের দীর্ঘনিশ্বাস বনে বনে হায়-হায় করে উঠল, পাতা পড়ছে ঝরে ঝরে। বসন্তের ভূমিকায় ঐ পাতাগুলি একদিন শাখায় শাখায় আগমনীর গানে তাল দিয়েছিল, তারাই আজ যাবার পথের ধূলিকে ঢেকে দিল, পায়ে পায়ে প্রণাম করতে লাগল বিদায়পথের পথিককে। নবীনকে সন্ন্যাসীর বেশ পরিয়ে দিলে; বললে, তোমার উদয় সুন্দর, তোমার অস্তও সুন্দর হোক।
ঝরা পাতা গাে, আমি তােমারি দলে
মন থাকে সুপ্ত, তখনো দ্বার থাকে খোলা, সেইখান দিয়ে কার আনাগোনা হয়; উত্তরীয়ের গন্ধ আসে ঘরের মধ্যে, ভুঁইচাঁপা ফুলের ছিন্ন পাপড়িগুলি লুটিয়ে থাকে তার যাওয়ার পথে; তার বীণা থেকে বসন্তবাহারের রেশটুকু কুড়িয়ে নেয় মধুকর গুঞ্জরিত দক্ষিণের হাওয়া; কিন্তু, জানতে পাই নে, সে এসেছিল। জেগে উঠে দেখি, তার আকাশপারের মালা সে পরিয়ে গিয়েছে- কিন্তু এ-যে বিরহের মালা।
কখন্ দিলে পরায়ে
বনবন্ধুর যাবার সময় হল, কিন্তু, হে বনস্পতি শাল, অবসানের দিন থেকে তুমি অবসাদ ঘুচিয়ে দিলে। উৎসবের শেষ বেলাকে তোমার
১৯১