পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনে-পাহাড়ে ويل : সুবোধবাবু বল্লেন-আপনি কাল আসুন না চাইবাসায়। - --আপনি এলে আমরা অত্যন্ত আনন্দ পাবো । আমরা বিদায় নিলাম পরেশবাবুর কাছ থেকে। কি সুন্দর জ্যোৎসু । বার বার আমার মনে হচ্ছে বনের সেই অদেখা ঝর্ণাটির কথা । যদি এতরাত্রে এমন জ্যোৎসার মধ্যে সেখানে যাওয়া যেত । কিন্তু কোনো কথা বলতে ভরসা হোল না, রাত প্ৰায় দশটা বাজে । সুবোধবাবু বল্পেন-কাল সেরাইকেল যাওয়া যাবে। যদি পরেশবাবু আসেন মিঃ সিংহ বল্লেন-এবার কিন্তু আর নিক'পিক নয়, পুরো পিকনিকই Gtk -অসুবিধে আছে । ওসব হাঙ্গামা পোষাবে না। নেমস্তন্ন, মানে পার্টি আছে সেখানে -আমরা বিনা নিমন্ত্রণে পাটিতে যাই কি করে ? --তাতে কিছু আটকাবে না। এ সব নিজেদের মধ্যের ব্যাপার। পরদিন আমরা বেশ একটা বড় দল সেরাইকেলার পথে রওনা হলাম। ও পথে মাইল পাঁচেক যাবার পরে মুক্ত প্ৰান্তরের এখানে ওখানে অসংখ্য গণ্ডশৈল আমাদের চোখে পড়লো। আরিজোনার ‘পেইন্টেড ডেজার্ট” ছবিতে যেমনটি দেখেছিলাম, ঠিক তেমনি। কি অদ্ভুত ছন্নছাড়া মুক্তরূপ প্ৰকৃতি ! ধরণীর অরুণোদয় এখানে বাধাবন্ধহীন, নিজের মহিমাতে নিজে ভরপুর। ঘরদোরের পাচিল দেওয়াল এরা একমুহূৰ্ত্তে ভেঙে দিয়ে মনটাকে গৃহবিবাগী, উদাস বাউল করে তোলে। কোনো পাহাড়ের ওপর কোনো গাছ নেই-শুধু কালো কোয়ার্টজাইট পাথরের স্তুপ, কোনাে কোনােটাতে সামান্য একটু ঘাস । দূরে পশ্চিম দিগন্তে সুদীর্ঘ বরকেলা শৈলমালা, দূরত্বের কুয়াসাতে কিছু অস্পষ্ট। ওরাই ওপরে কোথায় সেই চিটিমিটি-বাংলো। ওরই সানুদেশের ঘন বনের মধ্যে দিয়ে অন্ধকারে সেদিন মোটরে চড়ে নেমে আসা !