পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনে-পাহাড়ে s -কোনো ভয় নেই। দোকানের কোনো জিনিস নেই। জলযোগ সেরে আমরা রাজবাড়ী দেখতে গেলাম। এমন খুব বড় বাড়ী নয়, বাংলাদেশের গ্ৰাম্য জমিদার-বাড়ীর মত সাদাসিদে,- আড়ম্বরশুন্য। আমরা দরবার-হলে নীত হলাম। এই হলের দেওয়ালে চারিদিকে রাজপরিবারের ব্যক্তিগণের বড় ছোট তৈলচিত্র, একপ্ৰান্তে থিয়েটারের ষ্টেজ। এই সেরাইকেলার রাজপরিবার নৃত্যশিল্পের উৎসাহী পৃষ্ঠপোষক, এরা অনেকে বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী। মহাত্মা গান্ধীর সামনে এম্পায়ার থিয়েটারে যে চৌ-নৃত্য প্ৰদৰ্শিত হয়েছিল, তার একটা বড় ফটোগ্রাফ দেখলাম। এখানে। পাতিয়ালার রাজবংশের সঙ্গে সেরাইকেলার রাজবংশ বৈবাহিক সম্বন্ধে আবদ্ধ। এ বিখ্যাত ঘটনা যেদিন ঘটেছিল, সেদিন আমি, পরিমল গোস্বামী, “বঙ্গশ্ৰী’র সহকারী সম্পাদক কিরণবাবু ও বন্ধুবর প্রমোদ দাসগুপ্ত যাচ্ছিলাম সম্বলপুর জেলার দুৰ্গম পৰ্বতারণ্যের অভ্যন্তরে বিক্ৰমসোল নামক স্থানের অজানা শিলালিপির সন্ধানে। সিনি জংসনে আমরা এই বিয়ের জনসমাগম ও শোভাযাত্রা দেখি । সে হোল ১৯৩৩ সালের মার্চ মাসের কথা । রাজবাড়ী থেকে বেরিয়ে আমরা স্থানীয় মিউজিয়ম দেখতে গেলাম। এটি বিশেষ করে এই রাজ্যে যে সব খনিজ দ্রব্য পাওয়া যায়, তারই মিউজিয়ম। মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার বাবু, হরিদাস মহান্তি আমাদের সে সব দ্রব্য বিশেষ করে দেখালেন। খনিজ এ্যাসবেষ্টেস। এখানে প্ৰথম দেখলুম একটা কঁচের আলমারির মধ্যে। বালুম -এটা কি জিনিস ? কিসের সূতো ? কারণ একগোছা সরু রৌপ্যসূত্রের মত দেখতে জিনিসটা । হরিদাসবাবু বল্লেন-ও হোল এ্যাসবেষ্টোস। খনি থেকে ওঠানো অবস্থায়। আরও নানা ধাতু দেখলাম বিভিন্ন কঁাচের আলমারিতে। বিকেলের দিকে আমরা সেরাইকেল থেকে বার হই । আমাদের গাড়ীতে এক হাঁড়ি খাবার তুলে দিলেন এরা।