পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बन-ट्रांऊं ro সময় ঝুপ করে কি একটা শব্দ হোল। শব্দটা একটু অদ্ভুত ধরণের । শুকনো লতাপাতার উপর ঝুপ করে যেন একটা ভারি জিনিস পড়লো। পিছন ফিরে দেখি শুকনো ঝরা পাতার রাশির ওপর একটা বড় মোটা মিশকালো সাপ। কিন্তু সাপটার মুখ আর লেজটার দিকে চোখে পড়ছে না। আমি মাত্র তার মাঝখানটা দেখতে পাচ্ছি। আমি যেখানে বসে, সাপটা সেখান থেকে হাত আষ্টেক দূরে। ওধরণের আর মোটা সাপ আমি কখনো দেখিনি। হঠাৎ আমার বড় ভয় হলো । এই নির্জন পাহাড়ে সন্ধ্যার অন্ধকারে এই ভীষণদর্শন সাপের হাতে পড়লে নিজেকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাড়া যদি করে পালাতে পারবো না। এই কঁাটাগাছ ঠেলে । আমার হাত পা আড়ষ্ট হয়ে গেল। তাড়াতাড়ি উঠে নামতে, যাবো, এমন সময় সাপটা যেন পাশের দিকে অগ্রসর হয়ে আমার কাছে এসে পড়লো। এখনও ওর মুখ দেখা যাচ্ছে না, সুতরাং ও আমাকে টের পায় নি। নামতে গিয়ে মনে হোতে লাগল পাহাড়ের প্রত্যেক ফাটলে অসংখ্য ভীষণদর্শন সাপ বাসা বেঁধেছে। তখন বেশ অন্ধকার হয়ে এসেচে; ভালো কিছু দেখতেও পাচ্ছিনে। ক্যাটাগাছে হাত পা ছড়ে রক্তপাত হতে লাগলো। প্ৰাণ ভয়ে সে সব অগ্ৰাহ করে কোনো রকমে নামতে লাগলাম। পথও যেন আর ফুরোয় না। ওঠবার সময় বেশ উঠেছিলাম। এখন সেই পথ দুৰ্গম ও কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্ধকারও এখন বেশ । যা হোক অতি কষ্টে এক রকম করে তো নামা গেল। ছুটতে ছুটতে শালবনের মধ্যে এসে পড়লাম। উলদাডুংরি আর চাইবাসার রাস্তার মধ্যে ( জায়গাটা রাশি মাইনস ও চন্দ্ররেখা গ্রামের কাছাকাছি) এই চারা শালবন । অদূরে পথ । গালুডির হাট থেকে কয়েকজন বুনো লোক ফিরছিল ! তারা আমাকে ও ভাবে শালবনের মথ্যে হঁটিতে দেখে অবাক হয়ে গেল । বল্লে-কি বাবু ? তখন তাদের খুলে সব বল্লাম ।