পাতা:বন-ফুল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বন-ফুল।
১৯

দেখে পূর্ণচন্দ্র হাসে, নিশিরে রজতবাসে
ঢাকিয়া, হৃদয় প্রাণ করি অবারিত—
জাহ্ণবী বহিছে ধীরে, বিমল শীতল নীরে
মাখিয়া রজত রশ্মি গাহি কলকলে—
হরষে কম্পিত কায়, মলয় বহিয়া যায়
কাঁপাইয়া ধীরে ধীরে কুসুমের দলে—
ঘাসের শয্যার পরে, ঈষৎ হেলিয়া পড়ে
শীতল করিছে প্রাণ শীত সমীরণ—
কবরীতে পুষ্পভার, কেও বাম পাশে তার
বিধাতা এমন দিন হবে কি কখন?
অদৃষ্টে কি আছে আহা! বিধাতাই জানে তাহা
যুবক আবার ধীরে কহিল বালায়,—
“কিসের বিলম্ব আর? ত্যজিয়া কুটীর বার।
আইস আমার সাথে কাল বহে যায়!”
তুলিয়া নয়ন দ্বয়, বালিকা সুধীরে কয়,
বিষাদে ব্যাকুল আহা কোমল হৃদয়—
“কুটীর! তোদের সবে, ছাডিয়া যাইতে হবে
পিতার মাতার কোলে লইব আশ্রয়।
হরিণ! সকালে উঠি, কাছেতে আসিত ছুটি
দাঁড়াইয়া ধীরে ধীরে আঁচল চিবায়;