পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দশম অধ্যায়-ঝাল।
১৬৭

জল দাও। ফুটিলে কষান আনাজ ও বড়ি (গোটা) ছাড়। সিদ্ধ হইলে জিরা-মরিচ বাটা, (তেজপাত বাটা, পিপুল বাটা) ও পিঠালী জলে গুলিয়া ঢালিয়া দাও। নাড়িয়া চাড়িয়া রস অপেক্ষাকৃত গাঢ় হইলে নামাও। নামাইয়া কাটখোলায় ভাজা ধনিয়া ও রাঁধনীর গুঁড়া একত্রে জল দিয়া পাটায় একটু বাটিয়া লইয়া মিশাও।

 ধনিয়া এবং রাঁধনী কাঁচা বাটিয়া দিলে তাহার স্বাদ ব্যঞ্জনে ভাল মত সংক্রমিত হয় না। এই নিমিত্ত উহা কাঁচা বাটিয়া মিশান স্থলে যাহাতে তৈলে, বা ঘৃতে একটু ভাজা হইতে পারে তাহার ব্যবস্থা করিতে হয়। কিন্তু ইহাতে তৈল বা ঘৃতের খরচ কিছু অধিক হয় সুতরাং তন্নিমিত্তও বটে এবং নিত্য ঝাল বাটার শ্রমের লাঘবের জন্যও বটে, গৃহস্থ বাটীতে সাধারণতঃ ধনিয়া এবং রাঁধনী পূর্ব্বে কাটখোলায় ভাজিয়া পাটায় পিষিয়া মিহি গুঁড়া করিয়া কাপড়ে ছাঁকিয়া ভাঁড়ে করিয়া উঠাইয়া রাখা হয়। রন্ধন কালে এই ভাজা ঝালের গুঁড়া আবশ্যক মত বাহির করিয়া একটু জল দিয়া পাটায় বাটিয়া লইয়া জিরা-মরিচাদির ঝাল সহ একত্রে বা পৃথক ভাবে পাক শেষে ব্যঞ্জন নামাইয়া বা নামাইবার অব্যবহিত পূর্ব্বে দেওয়া হয়।

 যাহাতে ভাজা ঝালের সুগন্ধ উপিয়া গিয়া অপচয় না হয়, অথবা স্যাঁতা লাগিয়া শীঘ্র নষ্ট না হয় তজ্জন্য উহা তৈলে বা ঘৃতে ‘পাকান’ মাটির ভাঁড়ে রাখিয়া উত্তমরূপে তাহার মুখ একখানা ‘মুচির’ দ্বারা ঢাকিয়া পুনঃ এক খণ্ড ন্যাকড়ায় ভাঁড়ের মুখ বাঁধিয়া শুষ্ক স্থানে উঠাইয়া রাখা হয়। কিন্তু জিরা-মরিচ সম্বন্ধে তদ্রুপ করা হয় না,—উহা প্রতিবারে রন্ধন কালে টাটকা বাটিয়া লইয়া ব্যঞ্জন নামাইবার অব্যবহিত পুর্ব্বে বা পরে মিশান হইয়া থাকে। তাহার কারণ, জিরা ঐরূপ ভাবে কাটখোলায় ভাজিয়া তুলিয়া রাখিলে তাহার সুবাস অধিক দিন স্থায়ী হয় না এবং উহার কাঁচা-সদ্যবাটা অবস্থার আস্বাদনই উত্তম; অপিচ ফোড়ন রূপে ভাজা অবস্থাতেও