পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অধ্যায়- সিদ্ধ
১১

 এখন চালনীতে যে ক্ষুদ অবশিষ্ট আছে, তাহা লইয়া ভাত পাক কর। মুঠাগুলি তাহার মধ্যে ছাড়। সুসিদ্ধ হইলে মাড়ে মাড়ে ভাত নামাও। এই ভাত বেশী পরিমাণে ঘৃত এবং নুণ মাখিয়া খাইতে ভাল, এবং মুঠা ডাইল অথবা বেস্যরী প্রভৃতি সহ খাইতে ভাল। মুঠা গুড় দিয়াও . সাধারণতঃ খাওয়া হইয়া থাকে। অগ্রহায়ণ মাসে নুতন আমন ধান উঠিলে লুঠন ষষ্ঠীর দিনে এই ফেণ-মুঠা খাওয়া হইয়া থাকে।

১৪। ক্ষুদের জাউ

 চাঊেলর ক্ষুদ বেশ করিয়া ধুইয়া হাঁড়িতে ক্ষুদ ও পরিমাণ মত জল দিয়া সিদ্ধ কর। সিদ্ধ হইলে ঘাঁটিয়া লইয়া নামাও। ইহার জল গালিতে হয় না। এক্ষণে শুকালঙ্কা পোড়াইয়া গুঁড়া,করিয়া লও এবং কালীজিরা. আধকচড়া করিয়া বাট। পরে উভয় তেল নুণ সহ একত্রে মিশাইয়া ক্ষুদের জাউর সহিত মাখিয়া খাও।

১৫। পর্য্যুষিত অন্ন

 পর্যুষিত অন্ন বিবিধ উপায়ে প্রস্তুত ও বিবিধ উপকরণ যোগে ভক্ষণ করা বাঙ্গালা দেশের সর্বত্র প্রচলিত আছে। এতন্মধ্যে সচরাচর ব্যবহৃত দুই একটি সম্বন্ধে লিখিত হইল।

 (ক) পান্তাভাত— অন্নে জল দিয়া কিছুক্ষণ রাখিয়া দিলে যখন তাহা কিঞ্চিৎ অম্লস্বাদবিশিষ্ট হইবে তখন তাহার সহিত নুণ, ছোট-পেঁয়াজ, ঝালকাসুন্দী প্রভৃতি মাখিয়া খাইবে। পান্তা ভাতের অন্ন জলকে ‘আমানি’ বলে।

 কাঁচা আম দেওয়া মটর ডাইলের চড়চড়ী দ্বারা মাখিয়া অপর কোন প্রকার চড়চড়ী, কাঁটালের ঝাল, বেস্তরী প্রভৃতি সহও ইহা খাইতে ভাল। দুর্গোৎসবে বিজয়-দশমীর দিবসে দর্পণ-বিসর্জ্জনের পুর্ব্বে পাস্তাভাত ও নলের বেস্যরী দ্বারা ‘মা’র ভোগ দেওয়া হইয়া থাকে।