আনাজ বুড়া হইলে একটু উত্তপ্ত জলে ভাপ দিয়া লইয়া ভাজিতে হয়। ফলা-আলু, কোবি প্রভৃতি সিদ্ধ করিয়া লইয়া ভাজাই প্রশস্ত।
ভাসা তৈলে বা ঘৃতে অথবা অল্প তৈলে বা ঘৃতে উভয়বিধ ভাবেই ভাজা চলে। শেষোক্ত প্রকারে ভজিতে হইলে মধ্যে মধ্যে জলের ছিটা বা আছড়া দিয়া ভাজিতে হইবে। উভয়বিধ ভাজির স্বাদের অবশু তারতম্য হইবে। মুচমুচে করিয়া ভাজিতে ভাসা তৈলে বা ঘৃতে ছাড়িতে হইবে এবং নরম করিয়া ভজিতে হইলে অল্প ঘৃতে বা তৈলে ভাজিবে। আমাদের দেশে তৈল বলিতে সচরাচর সরিষার তৈলই বুঝায়, সুতরাং এতৎ গ্রন্থে ‘তৈল’ শব্দ সরিষার তৈল অর্থেই সর্ব্বত্র ব্যবহৃত হইয়াছে। যেখানে অপর বিধ তৈল ব্যবহৃত হইবে সেখানে তাহার নাম বিশেষ ভাবে লিখিত হইবে। ঘৃত বা তৈলউপযুক্ত ভাবে উত্তপ্ত না হইলে তাহাতে আনাজ মৎস্যাদি ভাজা কর্ত্তব্য নহে। তৈলাদি কাঁচা থাকিলে ভর্জ্জিত দ্রব্য জড়াইয়া বা ভাঙ্গিয়া যাইবে এবং তৈল-প্যাচ-পেচে হইবে। আবার ঘৃত বা তৈল অধিক উত্তপ্ত হইলে তাহাতে ভজিবার দ্রব্য ছাড়িলে তাতিয়া বা জ্বলিয়া যাইতে পরে। সাধারণতঃ ঘৃত বা তৈলের গাঁজা মরিয়া ধোঁয়া বাহির হইতে আরম্ভ হইলেই তাহা ভজিবার পক্ষে উপযুক্ত হইয়াছে বুঝিতে হইবে। ঘৃত অপেক্ষা তৈল বিলম্বে তাতে।
মটরের ডাইল বাটা, মাষকলাইর ডাইল বাটা, বুটের বেশম, তিল-পিটালী বাটা, পোস্তদানা-পিটালী বাট,মসিনা-পিটালী বাট, সরিষা বাটা, ময়দা প্রভৃতির আবরণে কোনও কোনও আনাজ পাট পাট করিয়া কুটিয়া ভাজিলে তাহার স্বাদ বেশ চমৎকার হইয়া থাকে। এবং ময়দা সুজী (এবং বৈদেশিক রন্ধনে ব্রেডক্রাম্ব) প্রভৃতির আবরণে মৎস্য মাংসাদি ভাজিলে তাহা অতি সুস্বাদু হইয়া থাকে। উপরে একটা আবরণ থাকা প্রযুক্ত ভর্জ্জিত দ্রব্যের রস শুষ্ক হইতে না পারিয়া তাহা সরস, কোমল ও সুস্বাদু হইয়া থাকে।