করিয়া বেশ নসনসে বা লপেট গোছ করিয়া লইয়া নামাইতে হয়। ভাজির সমতুল্য ছেঁচ্কী কদাপী মুচমুচে হয় না, তবে ‘ঝুরি’ ঠিক লপেট গোছ না হইয়া একটু ঝুরঝুরে গোছ হইয়া থাকে। অতএব ছেঁচ্কীর বিশেষত্ব—মিহি করিয়া আনাজ বানানে এবং পশ্চাৎ তাহা তেলে লঙ্কা, মেথি প্রভৃতি ফোড়ন দিয়া অধিক আংসানে।
ছেঁচ্কী হইতে ‘মেথি পর্ব্ব’ আরম্ভ। মেথি পর্ব্ব চারি অধ্যায়ে বিভক্ত—(১) ছেঁচ্কী। (২) চড়চড়ী। (৩) শুক্তানি ও (৪) ঝোল। তৎপর ‘জিরা পর্ব্ব’ আরম্ভ। তাহাও চারি অধ্যায়ে বিভক্ত—(১) সূপ। (১) ঘণ্ট। (৩) ঝাল ও (৪) কালিয়া। বরেন্দ্রের তাবৎ ব্যঞ্জনই (তরকারী) এই অষ্টাধ্যায়ের অন্তর্গত।
মেথি পর্ব্বে সর্ব্বত্র মেথিও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া রন্ধন হইবে এবং জিরা পর্ব্বে সর্ব্বত্র জিরা ও লঙ্কা বা শুধু জিরা ফোড়ন দিয়া রন্ধন হইবে। বরেন্দ্রে ‘পাঁচ-ফোড়ন’ব্যবহার প্রচলন নাই। মোটামুটি অষ্ট প্রকার ব্যঞ্জনের মধ্যে চারি প্রকার মেথি ফোড়ন দিয়া এবং অবশিষ্ট চারি প্রকার জিরা ফোড়ন দিয়া রন্ধন হইয়া থাকে। তবে অবশ্য ব্যঞ্জন অথবা আনাজাদি ভেদে মেথি ও জিরার সহিত অপর যে ফোড়ন সেখানে খাপ খাইবে কেবল তাহাই দেওয়ার বিধি আছে। যেমন ‘শুক্তানিতে’ মেথির সহিত দুটো সরিষা ফোড়ন দিতে হইবে এবং ‘কালিয়াতে’ জিরার সহিত দুটো গরম মশলা ফোড়ন দিতে হইবে। মেথির সহিত শুক্নালঙ্কা ফোড়ন দেওয়া অনিবার্য্য, কিন্তু জিরার সহিত ইচ্ছা করিলে তাহা বাদ দেওয়াও যাইতে পারে। মেথির সহিত বাটা ঝালের মধ্যে একমাত্র লঙ্কা বাটা ছাড়া আর কোন প্রকার বাটা ঝালই দিবে না, কিন্তু জিরা ফোড়নের সহিত জিরা-গোলমরিচ বাটা দেওয়া অবশ্য কর্তব্য। অপিচ তৎসঙ্গে লঙ্কা বাটা, ধনিয়া বাটা, তেজপাতা বাটা, রাঁধুনী বাটা প্রভৃতিও অনেক স্থলেই দিতে হয়। কেবল একমাত্র ‘সূপে’ বা ডাইলের