পাতা:বর্ত্তমান জগৎ দ্বিতীয় ভাগ.pdf/২২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রোমেনিয়ার ছাত্র v তারপর আর একবার ভিন্সেণ্ট স্মিথের সঙ্গে দেখা হইল। ইহঁর নিকট একজন ইংরাজ “অর্থ শাস্ত্ৰে”র আলোচনা করিতেছিলেন । এই ব্যক্তি লক্ষ্মেী কলেজের অধ্যাপক। দেখিলাম,ভিন্সেণ্ট স্মিথ অধ্যাপককে উপদেশ দিবার সময়ে নরেন্দ্রনাথ লাহার প্রণীত নূতন গ্ৰন্থ দেখাইয়া দিলেন। আজি বিকালে চা-পানের সময়ে কাব্য আলোচনা হইল । সাভিয়া ও রোমেনিয়া দেশের দুই জন লোকের সঙ্গে চাপান করা হইতেছিল । সঙ্গে এক জন ভারতীয় মুসলমান কবিও ছিলেন। তঁহার উর্দু, কবিতা শুনিলাম। পরে রোমেনিয়াবাসী তাহদের প্রকৃতিবিষয়ক একটি ক্ষুদ্র কবিতা আবৃত্তি করিলেন । ইনি বুখারেষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া অক্সফোর্ডে নৃতত্ত্ব শিক্ষা করিতেছেন। এই বিজ্ঞানে ইহার যৎপরোনাস্তি উৎসাহ দেখিলাম। ইনি রবিবাবুর ইংরাজী ‘সাধন”-গ্রন্থের প্রথম প্ৰবন্ধ রুমেণিয়া ভাষায় অনুবাদ করিয়াছেন । আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “সাধনার অধ্যাত্মতত্ত্ব আপনার ভাল লাগিল কেন ?” ইনি বলিলেন, “মাত্র একটি প্ৰবন্ধ পাঠ করিয়াছি। তাহাতে ব্যক্তির সঙ্গে সমগ্রের সম্বন্ধ যেরূপ বুঝান হইয়াছে পাশ্চাত্য দার্শনিকগণের রচনায় তাহ পাই নাই। কোন কোন দার্শনিক ব্যক্তির প্রাধান্য প্রচার করিয়াছেন। কেহিবা বিশ্বের ও নিখ্রিলের মহিমা খ্যাপন করিয়াছেন। কিন্তু রবীন্দ্রের গ্রন্থে বুঝিলাম, হিন্দুরা এই দুয়ের সামঞ্জস্য দেখিয়াছেন। হিন্দুর মতে প্ৰত্যেক ব্যক্তির ভিতরেই বিশ্বের, সমগ্ৰ নিখিলের বিকাশ হয়। এই ধারণা আমাদের নিকট সম্পূর্ণ নূতন।” রোমেনিয়ার ছাত্রকে অধ্যাপক ম্যারেটের উপযুক্ত শিন্য বুঝিতে পারিলাম । ইনি বিজ্ঞান হিসাবে নৃতত্ত্বের আলোচনা চাহেন । এজন্য ভারতবর্ষের উৎসব আমোদ, সঙ্গীত, শোভাযাত্রা, পূজা, ব্ৰতানুষ্ঠান, রীতিনীতি ইত্যাদির সঙ্কলন করিবার জন্য বিশেষ অনুরোধ করিলেন ।