পাতা:বর্ত্তমান জগৎ - প্রথম ভাগ.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিশরের পথে-জাহাজ-জীবন বুঝি ধার শক্তি আছে। প্ৰায় সকলেই ইংরাজীতে অনভিজ্ঞ । বড় বড় কৰ্ম্মচারীদের মধ্যে ২১ জন ইংরাজী বলিতে ও বুঝিতে পাবে। বাঙ্গালী যতটুকু হিন্দী জানে বা বুঝে, ফরাসী ততটুকু ইংরাজী জানে না বা বুঝে না । আবার তথাকথিত শিক্ষিত ইংরাজেরাও ফরাসী ভাষায় সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ। . ভাষা হিসাবে ফরাসী জাহাজে ভারতবাসীর যে অসুবিধা, ইংরাজিদিগেরও সেইরূপই অসুবিধা । খাওয়া দাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে ভাষার জন্য ভারতবাসী ও ইংরাজ উভয়েরইসমান গোলযোগ । কোনরূপে ইসারায় ইঙ্গিতে আমরা কাজ চালাইয়া লাইতে লাগিলাম। আমাদের সঙ্গে যে বাঙ্গালী পণ্ডিত রহিয়াছেন তিনি ফরাসী সাহিত্যের প্রাচীন আধুনিক অনেক গ্ৰন্থই পড়িয়া যাইতে পারেন এবং সেগুলি সহজেই বুঝিতেও পারেন। কিন্তু ফরাসী ভাষার উচ্চারণগুলি তাহার ‘রপ্ত’ হয় নাই—কাজেই কথা বলিতে তিনি সম্পূর্ণ অপারগ। জাহাজের খালাশীগিরি করিতে বিশেষ কুস্তীগিরি পালোয়ান হওয়ার আবশ্যকতা নাই। ফরাসী নাবিকদিগকে দেখিয়া ধারণা হইল যে, যে কোন লোকই এ সব কাজ করিতে পারে। বাঙ্গালী, হিন্দুস্থানী, মারাঠা, পাঞ্জাবী, মান্দ্ৰাজী ইত্যাদি যে কোন জাতির পক্ষেই জাহাজে চাকরী করা অসম্ভব নয়। ফরাসী খালাসীদের মধ্যে খুব হৃষ্ট পুষ্ট, গোলগাল, লম্বাচৌড়া লোক প্রায়ই নাই। অধিকাংশই বেঁটে খাট, পাতলা রোগা । ভারতবাসীর শারীরিক দুর্বলতা যতই হউক না কেন, সে বিনা কষ্টে জাহাজের কাজ করিতে পারে । সুযোগ পাইলে বোধ হয় এখনও সম্ভব । তবে বহুকালের অনভ্যাসে এখন আমরা আত্মশক্তিতে বিশ্বাস হারাইয়াছি। আর বুলি শিখিয়াছি যে, চাটগােঁয়ে মুসলমানদের মত শরীর নাথাকিলে কি অত কষ্টকর। কাৰ্য্য করা যায় ? বিস্তুতঃ জাহাজের নাবিক হইবার উপযুক্ত স্বাস্থ্য ও শারীরিক শক্তি সাধারণ বাঙ্গালীর আছে।