পাতা:বর্দ্ধমানের ইতিকথা - নগেন্দ্রনাথ বসু.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্থান-পরিচয় প্ৰায় অৰ্দ্ধ ক্রোশ উত্তরে ছিল, গঙ্গার গতি-পরিবর্তনের সহিত গ্রাম ও ক্ৰমে সরিয়া আসিয়াছে। মহাপ্রভুর অভু্যদয়ের পূর্ব হইতেই অগ্রদ্বীপ সুপ্রাচীন তীৰ্থ বলিয়া গণ্য। দিগ্বিজয়প্ৰকাশে লিখিত আছে, বারাণসীতে গঙ্গামান করিলে যেরূপ ফল হয়, বরুণীর দিন অগ্রদ্বীপে গঙ্গামান করিলে সেইরূপ ফল হয় । এখানকার ফল মাহান্ত্র্যের জন্য রাজা বিক্ৰমাদিত্য এখানে গঙ্গামান করিতে আসিতেন। আজও বারুণী উপলক্ষে এখানে ১৫ দিনব্যাপী বড় মেলা হয়, তাহাতে প্ৰায় লক্ষ লোকের সমাগম হইয়া থাকে। অধুনা গোপীনাথ-বিগ্রহের জন্যই এই স্থান প্ৰসিদ্ধ। কুলাই গ্রামের বিবরণ-প্রসঙ্গে লিখিয়াছি যে, উত্তররাঢ়ীয় কায়স্থ ঘোষবংশে বাসুদেব, গোবিন্দ ও মাধব প্ৰভৃতি নয় ভাই জন্মগ্রহণ করেন। কাশীপুর বিষ্ণুতলায় সিংহ-বংশে গোবিন্দঘোষের বিবাহ হয়। পত্নীর মৃত্যুর পর সন্তানাদি না থাকায় তাহার সংসারু-বৈরাগ্য উপস্থিত হয়। তিনি অগ্রদ্বীপের নিকট গঙ্গাতীরে আসিয়া বাস করেন। এক দিবস মহাপ্ৰভু শ্ৰীচৈতন্যদেব ভক্তমণ্ডলী-পরিবৃত হইয়া ভাগীরথীসলিলে অবগাহন করিতেছেন, এমন সময়ে গোবিন্দ তথায় উপস্থিত হইলেন। তিনি নবীন সন্ন্যাসীর তেজোময় অপূৰ্ব্ব মুখশ্ৰী দেখিয়া ভক্তিরসে আপ্লত হইলেন, মহাপ্রভুর চরণে পড়িয়া কঁদিতে কঁাদিতে কহিলেন, “প্ৰভো ! আমি সংসার চাই না, ধন মান ঐশ্বৰ্য্য চাই না, আত্মীয় স্বজন চাই না, কেবল তোমার ঐ চরণকমল সেবা করিতে চাই ।” এই কথা শুনিয়া গৌরাঙ্গদেব গোবিন্দকে সংসারের নানা প্ৰলোভন দেখাইয়া তাহাকে ংসারে আকৃষ্ট করিতে চেষ্টা করিলেন । কিন্তু গোবিন্দ কিছুতেই বিচলিত হইবার লোক নহেন। তিনি বলিলেন, “ধন মান ঐশ্বৰ্য্য সমস্ত দূর হউক, উহারা আমাকে আর জ্বালাইতে পরিবে না। এক্ষণে অনুগ্ৰহ করিয়া শ্ৰীচরণে স্থান দিন৷” এই বলিয়া তিনি চৈতন্যের পা জড়াইয়া ধরিলেন। মহা প্ৰভু শ্ৰীচৈতন্যও গোবিন্দকে প্ৰকৃত ভক্ত জানিতে পারিয়া তাহাকে আলিঙ্গন করিলেন এবং কহিলেন, “যদি নিষ্কাম ব্ৰত পালন করিতে পার, তাহা হইলে আমার সহিত থাকিতে পাইবে।” গোবিন্দ ইহা শুনিয়া মহানন্দে চৈতন্যের পদরেণু গ্ৰহণ করিলেন এবং নিষ্কাম ব্ৰত পালনে সন্মত হইলেন। পরে কিছুদিন তিনি মহা প্রভুর সহিত भशनहन्त काप्लेाश्रुगन । BDBBS SBDKuDuS DBDDDDLDDS SgBBS S DS BB SDBBDS BB DDD বলিলেন, “আজ আর মুখশুদ্ধি হইল না।” শিষ্যগণ নীরব রহিলেন । গোবিন্দ আমনি কৃতাঞ্জলিপুটে প্রভুর সম্মুখে যাইয়া কছিলেন, “প্ৰভো! আমার নিকট একটি হরীতকী আছে ; যদি অনুমতি করেন, তাহা হইলে আপনার সেবার জন্য অৰ্পণ করি।” এই কথায় শ্ৰীচৈতন্য হাসিয়া উঠিলেন। তিনি কহিলেন, “গোবিন্দ ! তোমার ভক্তির সামগ্ৰী আমি আহিলাদের সহিত গ্ৰহণ করিলাম। কিন্তু আজ হইতে তুমি আমার সঙ্গ পরিত্যাগ করা।” গোবিন্দের মস্তকে যেন অকস্মাৎ বজাঘাত হইল। তিনি কঁাদিতে কঁাদিতে বলিলেন, “দেব! দাস এমন কি অপরাধ করিয়াছে, যাহার জন্য এ কঠোর আদেশ করিলেন ?”