পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
বহুবিবাহ।

হইবেক। যদি সুবিধা হয়, আসিবার সময় এই দিক হইয়া যাইব। এই বলিয়া ভোর ভোর চলিয়া গেলেন। স্বর্ণকে বলিয়াছিলাম, ত্রিপুরা ও কামিনীকে ডাকিয়া আন্, তারা জামায়ের সঙ্গে খানিক আমোদ আহলাদ করিবে। একলা যেতে পারিব না বলিয়া, ছুঁড়ী কোনও মতেই এল না। এই বলিয়া, সেই দুই কন্যার দিকে চাহিয়া, বলিলেন, এবার জামাই এলে, মা তোরা যাস্ ইত্যাদি। এইরূপে পাড়ার বাৰ্টী বাড়ী বেড়াইয়া জামাতার আগমনবার্তা কীর্ত্তন করেন। পরে স্বর্ণমঞ্জরীর গর্ভসঞ্চার প্রচার হইলে, ঐ গর্ভ জামাতৃকৃত বলিয়া পরিপাক পায়।

 এই সকল কুলীমহিলার পুত্র হইলে, ডাহারা দুপুরুযিয়া কুলীন বলিয়া গণনীয় ও পূজনীয় হয়। তাহাদের প্রতিপালন ও উপনয়নান্ত সংস্কার সকল মাতুলদিগকে করিতে হয়। কুলীন পিতা কখনও তাহাদের কোনও সংবাদ লয়েন না ও তত্ত্বাবধান করেন না; তবে, অন্নপ্রাশনাদি সংস্কারের সময় নিমন্ত্রণপত্র প্রেরিত হইলে, এবং কিছু লাভের আশ্বাস থাকিলে, আসিয়া আভ্যুদয়িক করিয়া যান। উপনয়নের পর, পিতার নিকট পুত্রের বড় আদর। তিনি সঙ্গতিপন্ন বংশজদিগের বাটীতে তাহার বিবাহ দিতে আরম্ভ করেন; এবং পণ, গণ প্রভৃতি দ্বারা বিলক্ষণ লাভ করিতে থাকেন। বিবাহের সময়, মাতুলদিগের কোনও কথা চলে না, ও কোনও অধিকার থাকে না। পুত্র যত দিন অল্পবয়স্ক থাকে, তত দিনই পিতার এই লাভজনক ব্যবসায় চলে। তাহার চক্ষু ফুটিলে, তাঁহার ব্যবসায় বন্ধ হইয়া যায়। তখন সে আপন ইচ্ছায় বিবাহ করিতে আরম্ভ করে, এবং এই সকল বিবাহে পণ, গণ প্রভৃতি যা পাওয়া যায়, তাহা তাহারই লাভ, পিতা তাহাতে হস্তক্ষেপ করিতে পারেন না। কন্যাসন্তান জস্মিলে, তাহার নাড়ীচ্ছেদ অবধি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পর্য্যন্ত যাবতীয় ক্রিয়া মাতুলদিগকেই সম্পন্ন করিতে হয়। কুলীনকন্যার বিবাহ ব্যয়সাধ্য, এজন্য পিতা এ বিবাহের সময় সে দিক দিয়া চলেন না।