পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
88
বহুবিবাহ।

হইতে হয়, এজন্য, তাহাকে গৃহ হইতে বহিষ্কৃত করা পরামর্শ স্থির হইলে, তাহার হিতৈষী আত্মীয়, এই সর্ব্বনাশ নিবারণের অন্য কোনও উপায় করিতে না পারিয়া, অনেক চেষ্টা করিয়া, তদীয় স্বামীকে আনাইলেন। এই মহাপুরুষ, অর্থলাভে চরিতার্থ হইয়া, সর্ব্বসমক্ষে স্বীকার করিলেন, রত্নমঞ্জরীর গর্ভ আমার সহযোগে সম্ভূত হইয়াছে।

 ভঙ্গকুলীনের চরিত্রবিষয়ে এ স্থলে একটি অপূর্ব্ব উপাখ্যান কীর্ত্তিত হইতেছে। কোনও ব্যক্তি মধ্যাহ্নকালে বাটীর মধ্যে আহার করিতে গেলেন; দেখিলেন, যেখানে আহারের স্থান হইয়াছে, তথায় দুটি অপরিচিত স্ত্রীলোক বসিয়া আছেন। একটির বয়ঃক্রম প্রায় ৬০ বৎসর, দ্বিতীয়টির বয়ঃক্রম ১৮।১৯ বৎসর। তাঁহাদের পরিচ্ছদ দুরবস্থার একশেষ প্রদর্শন করিতেছে; তাঁহাদের মুখে বিষাদ ও হতাশতার সম্পূর্ণ লক্ষণ সুস্পষ্ট লক্ষিত হইতেছে। ঐ ব্যক্তি স্বীয় জননীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, মা ইঁহারা কে, কি জন্যে এখানে বসিয়া আছেন। তিনি বৃদ্ধার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া কহিলেন,ইনি ভট্টরাজের স্ত্রী, এবং অল্পবয়স্কাকে লক্ষ্য করিয়া কহিলেন, ইনি তাঁহার কন্যা। ইঁহারা তোমার কাছে আপনাদের দুঃখের পরিচয় দিবেন বলিয়া বসিয়া আছেন।

 ভট্টরাজ দুপুরুষিয়া ভঙ্গকুলীন; ৫।৬ টি বিবাহ করিয়াছেন। তিনি ঐ ব্যক্তির নিকট মাসিক বৃত্তি পান; এজন্য, তাঁহার যথেষ্ট খাতির রাখেন। তাঁহার ভগিনী, ভাগিনেয় ও ভাগিনেয়ীরা তাঁহার বাচীতে থাকে; তাঁহার কোনও স্ত্রীকে কেহ কখনও তাঁহার বাটীতে অবস্থিতি করিতে দেখেন নাই।

 সেই দুই স্ত্রীলোকের আকার ও পরিচ্ছদ দেখিয়া, ঐ ব্যক্তির অন্তঃকরণে অতিশয় দুঃখ উপস্থিত হইল। তিনি, আহার বন্ধ করিয়া, তাঁহাদের উপাখ্যান শুনিতে বসিলেন। বৃদ্ধা কহিলেন, “আমি ভট্টরাজের ভার্য্যা; এটি তাঁর কন্যা, আমার গর্ভে জন্মিয়াছে। আমি পিত্রালয়ে থাকিতাম। কিছু দিন হইল, আমার পুত্র কহিলেন, মা আমি