পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।

তোমাদের দুজনকে অন্ন বস্ত্র দিতে পারি না। আমি কহিলাম, বাছা বল কি, আমি তোমার মা, ও তোমার ভগিনী, তুমি অন্ন না দিলে আমরা কোথায় যাইব। তুমি এক জনকে অন্ন দিবে, আর এক জন কোথায় যাইবে; পৃথিবীতে অন্ন দিবার লোক আর কে আছে। এই কথা শুনিয়া পুত্র কহিলেন, তুমি মা, তোমায় অন্ন বস্ত্র যেরূপে পারি দিব, উহার ভার আমি আর লইতে পারি না। আমি রাগ করিয়া বলিলাম, তুমি কি উহাকে বেশ্যা হইতে বল। পুত্র কহিলেন, আমি তাহা জানি না, তুমি উহার বন্দোবস্ত কর। এই বিষয় লইয়া, পুত্রের সহিত আমার বিষম মনান্তর ঘটিয়া উঠিল, এবং অবশেষে আমায় কন্যাসহিত বাটী হইতে বহির্গত হইতে হইল।

 কিছু দিন পূর্ব্বে শুনিয়াছিলাম, আমার এক মাস্তত ভগিনীর বাটীতে একটি পাচিকার প্রয়োজন আছে। আমরা উভয়ে ঐ পাচিকার কর্ম্ম করিব, মনে মনে এই স্থির করিয়া, তথায় উপস্থিত হইলাম। কিন্তু, আমাদের দুর্ভাগ্যক্রমে, ২।৪ দিন পূর্ব্বে, তাঁহারা পাচিকা নিযুক্ত করিয়াছিলেন। তখন নিত্যন্ত হতাশ্বাস হইয়া, কি করি, কোথায় যাই, এই চিন্তা করিতে লাগিলাম। অমুক গ্রামে আমার স্বামীর এক সংসার আছে, তাহার গর্ভজাত সন্তান বিলক্ষণ সঙ্গতিপন্ন, এবং তাঁহার দয়া ধর্ম্মও আছে। ভাবিলাম, যদিও আমি বিমাতা, এ বৈমাত্রেয় ভগিনী; কিন্তু,তাঁহার শরণাগত হইয়া দুঃখ জানাইলে, অবশ্য দয়া করিতে পারেন। এই ভাবিয়া, অবশেৰে তাঁহার নিকটে উপস্থিত হইলাম, এবং সবিশেষ সমস্ত কহিয়া, সজলনয়নে, তাঁহার হস্তে ধরিয়া বলিলাম। বাবা তুমি দয়া না করিলে, আমাদের আর গতি নাই।

 আমার কাতরতা দর্শনে, সপত্নীপুত্র হইয়াও, তিনি যথেষ্ট স্নেহ ও দয়া প্রদর্শন করিলেন, এবং কহিলেন, যত দিন তোমরা বাঁচিবে, তোমাদের ভরণপোষণ করিব। এই আশ্বাসবাক্য শ্রবণে আমি