পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
বহুবিবাহ।

গত্যন্তরবিহীন হইয়া, কোনও স্থানে গিয়া অবস্থিতি করিতেছেন। কন্যাটি সুশ্রী ও বয়স্থা, বেশ্যাবৃত্তি অবলম্বন করিয়াছে, এবং জননীর সহিত সচ্ছন্দে দিনপাত করিতেছে।

 এই উপাখ্যানে ভঙ্গকুলীনের যাদৃশ আচরণের পরিচয় পাওয়া যাইতেছে, অতি ইতর জাতিতেও তাদৃশ আচরণ লক্ষিত হয় না। প্রথমতঃ, এক মহাপুরুষ বৃদ্ধ মাতা ও বয়স্থা ভগিনীকে বাটী হইতে বহিস্কৃত করিয়া দিলেন। পরে, তাঁহারা স্বামী ও পিতার শরণাগত হইলে, সে মহাপুরুষও তাঁহাদিগকে বাটী হইতে বঞ্চিত করিলেন। এক ব্যক্তি, দয়া করিয়া, সেই দুই দুর্ভাগার গ্রাসাচ্ছাদনের ভারবহনে অঙ্গীকৃত হইলেন, তাহাতেও স্ত্রী ও কন্যাকে বাটীতে রাখা পরামর্শসিদ্ধ হইল না। স্বামী ও উপযুক্ত পুত্রসত্ত্বে, কোনও ভদ্রগৃহে, বৃদ্ধা স্ত্রীর কদাচ এরূপ দুর্গতি ঘটে না। পিতা ও উপযুক্ত ভ্রাতা বিদ্যমান থাকিতে, কোনও ভদ্রগৃহের কন্যাকে, নিতান্ত অনাথার ন্যায়, অন্নবস্ত্রের নিমিত্ত, বেশ্যাবৃত্তি অবলম্বন করিতে হয় না। ঐ কন্যার স্বামীও বিদ্যমান আছেন। কিন্তু, তাঁহাকে এ বিষয়ে অপরাধী করিতে পারা যায় না। তিনি স্বকৃতভঙ্গ কুলীন। যাহা হউক, আশ্চর্যের বিষয় এই, ঈদৃশ দোষে দুষিত হইয়াও, ভট্টরাজ ও তাঁহার উপযুক্ত পুত্র লোকসমাজে হেয় বা অশ্রদ্ধেয় হইলেন না।

 ভঙ্গকুলীনের কুল, চরিত্র প্রভৃতির পরিচয় প্রদত্ত হইল। এক্ষণে, সকলে বিবেচনা করিয়া দেখুন, এক ব্যক্তি অনেক বিবাহ করিতে না পারিলে, ঈদৃশ কুলীনের অপকার বা মানহানি ঘটিবেক, এই অনুরোধে, বহুবিবাহপ্রথা প্রচলিত থাকা উচিত ও আবশ্যক কি না। প্রথমতঃ, মেলবন্ধনের পূর্ব্বে, তাঁহাদের পুরাতন কুল এককালে নির্ম্মূল হইয়া গিয়াছে; তৎপরে, বংশজকন্যাপরিণয় দ্বারা, পুনরায়, তদীয় কপোল- কম্পিত নূতন কুলের লোপাপত্তি হইয়াছে। এইরূপে, দুই বার যাঁহাদের কুলোচ্ছেদ ঘটিয়াছে, তাঁহাদিগকে কুলীন বলিয়া গণ্য করিবার