পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
বহুবিবাহ।

দেখিয়া, তাহা স্থির বলতে পারা যায় না। বোধ হয়, কখনও সে দিন ও সে সৌভাগ্যদশা উপস্থিত হইবেক না।

 যাঁহারা এই আপত্তি করেন, তাঁহারা নব্য সম্প্রদায়ের লোক। নব্য সম্প্রদায়ের মধ্যে যাঁহারা অপেক্ষাকৃত বয়োবৃদ্ধ ও বহুদর্শী হইয়াছেন, তাঁহারা অর্ব্বাচীনের ন্যায়, সহসা এরূপ অসার কথা মুখ হইতে বিনির্গত করেন না। ইহা যথার্থ বটে, তাঁহারাও এক কালে অনেক বিষয়ে অনেক আস্ফালন করিতেন; সমাজের দোষসংশোধন ও সমাজের শ্রীবৃদ্ধিসাধন তাঁহাদের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য, এ কথা সর্ব্বক্ষণ তাঁহাদের মুখে নৃত্য করিত। কিন্তু, এ সকল পঠদ্দশার ভাব। তাঁহারা পঠদ্দশা সমাপন করিয়া বৈষয়িক ব্যাপারে প্রবৃত্ত হইলেন। ক্রমে ক্রমে, পঠদ্দশার ভাবের তিরোভাব হইতে লাগিল। অবশেষে, সামাজিক দোষের সংশোধন দূরে থাকুক, স্বয়ং সেই সমস্ত দোষে সম্পূর্ণ লিপ্ত হইয়া, সচ্ছন্দ চিত্তে কালযাপন করিতেছেন। এখন তাঁহারা বহুদর্শী হইয়াছেন; সমাজের দোষসংশোধন, সমাজের শ্রীবৃদ্ধিসাধন, এ সকল কথা, ভ্রান্তিক্রমেও, আর তাঁহাদের মুখ হইতে বহির্গত হয় না; বরং, ঐ সকল কথা শুনিলে, বা কাহাকেও ঐ সকল বিষয়ে সচেষ্ট হইতে দেখিলে, তাঁহারা হাস্য ও উপহাস করিয়া থাকেন।

 এই সম্প্রদায়ের অল্পবয়স্কদিগের এক্ষণে পঠদ্দশার ভাব চলিতেছে। অল্পবয়স্কদলের মধ্যে যাঁহারা অল্প বয়সে বিদ্যালয় পরিত্যাগ করেন, তাঁহাদেরই আস্ফালন বড়। তাঁহাদের ভাবভঙ্গী দেখিয়া, অনায়াসে লোকের এই বিশ্বাস জন্মিতে পারে, তাঁহারা সমাজের দোষসংশোধনে ও শ্রীবৃদ্ধিসম্পাদনে প্রাণসমৰ্পণ করিয়াছেন। কিন্তু তাঁহারা যে মুখমাত্রসার, অন্তরে সম্পূর্ণ অসার, অনায়াসে সকলে তাহা বুঝিতে পারেন না। তদৃশ ব্যক্তিরাই উন্নত ও উদ্ধত বাক্যে কহিয়া থাকেন, সমাজের দোষসংশোধন সমাজের লোকের