পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।

বহুবিবাহরক্ষণপক্ষ অবলম্বন করিয়াছেন, এ কথায় আমার বিশ্বাস জন্মে নাই; বরং তাদৃশ নির্দ্দেশদ্বারা অকারণে তাঁহার উপর উৎকট দোষারোপ হইতেছে, এই বিবেচনা করিয়াছিলাম। ঐ আরোপিত দোষের পরিহার বাসনায়, উল্লিখিত ব্যবস্থাপত্রের আলোচনা করিয়া, উপসংহার কালে লিখিয়াছিলাম,—

 “অনেকের মুখে শুনিতে পাই, তাঁহারা কলিকাতাস্থ রাজকীয় সংস্কৃতবিদ্যালয়ের ব্যাকরণশাস্ত্রের অধ্যাপক শ্রীযুত তারানাথ তর্কবাচস্পতি ভট্টাচার্য্য মহাশয়ের পরামর্শে ও সহায়তায় বহুবিবাহবিষয়ক শাস্ত্রসম্মত বিচারপত্র প্রচার করিয়াছেন। কিন্তু সহসা এ বিষয়ে বিশ্বাস করিতে প্রবৃত্তি হইতেছে না। তর্কবাচস্পতি মহাশয় এত অনভিজ্ঞ নহেন, যে এরূপ অসমীচীন আচরণে দূষিত হইবেন। পাঁচ বৎসর পূর্ব্বে, যখন বহুবিবাহনিবারণপ্রার্থনায়, রাজদ্বারে আবেদন করা হয়, সে সময়ে তিনি এ বিষয়ে বিলক্ষণ অনুরাগী ছিলেন, এবং স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া, নিরতিশয় আগ্রহ ও উৎসাহ সহকারে আবেদনপত্রে নামস্বাক্ষর করিয়াছেন। এক্ষণে তিনিই আবার বহুবিবাহরক্ষাপক্ষ অবলম্বন করিয়া, এই লজ্জাকর, ঘৃণাকর, অনর্থকর, অধর্ম্মকর ব্যবহারকে শাস্ত্রসম্মত বলিয়া প্রতিপন্ন করিতে প্রয়াস পাইবেন, ইহা সম্ভব বোধ হয় না”।

 আমার আলোচনাপত্রের এই অংশ পাঠ করিয়া, তর্কবাচস্পতি মহাশয় ক্রোধে অন্ধ হইয়াছেন, এই কথা শুনিতে পাইলাম; কিন্তু তুষ্ট না হইয়া, রুষ্ট হইলেন কেন, কিছুই স্থির করিতে পারিলাম না। অবশেষে, সবিশেষ অনুসন্ধানদ্বারা জানিতে পারিলাম, যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহকাণ্ড রহিত হওয়া আবশ্যক বিবেচনা করিয়া, কলিকাতাস্থ ধর্ম্মরক্ষিণী সভা তন্নিবারণবিষয়ে সবিশেষ সচেষ্ট ও তদ্বিষয়ে ব্রাহ্মণপণ্ডিতবর্গের মত সংগ্রহে প্রবৃত্ত হয়েন, এবং রাজশাসন ব্যতিরেকে এই জঘন্য ব্যবহার রহিত হওয়া সম্ভাবিত নহে,