পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
১১৩

পৈঠীনসিবচন

 ভার্য্যাঃ সজাতীয়াঃ সর্ব্বেষাং শ্রেয়স্যঃ স্যুঃ।

 দ্বিজাতিদিগের সজাতীয়া ভার্য্যা বিবাহ মুখ্য কল্প।

তবে, উভয় ঋষিবাক্যের এইমাত্র বৈলক্ষণ্য লক্ষিত হইতেছে, মনুবাক্যে সবর্ণাশব্দে একবচন আছে; পৈঠীনসিবাক্যে সজাতীয়া ভার্য্যা এই দুই শব্দে বহুবচন আছে। পৈঠীনসিবাক্যস্থিত ভার্য্যাশব্দে যে বহুবচন আছে, তর্কবাচস্পতি মহাশয় ঐ বহুবচনবলে সিদ্ধান্ত করিতেছেন, পুরুষ একবারে বহু ভার্য্যা বিবাহ করিতে পারে; তাঁহার মতে, ঐ বহুবচন প্রত্যেক বর্ণের অভিপ্রায়ে ব্যবহৃত হয় নাই, অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য তিন বর্ণের ভার্য্যা বুঝাইবার নিমিত্ত বহুবচন প্রযুক্ত হইয়াছে, এরূপ নহে। মনুবাক্যে সবর্ণাশব্দে একবচন আছে, অথচ সবর্ণাশব্দ দ্বারা ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য তিন বর্ণের ভার্য্যা বুঝাইতেছে; তিন বর্ণের ভার্য্যা বুঝাইবার অভিপ্রায় হইলে, পৈঠনসিবাক্যেও ভার্য্যাশব্দে একবচন থাকিলেই তাহা নিষ্পন্ন হইতে পারে; সুতরাং, বহুবচন প্রয়োগ নিতান্ত ব্যর্থ হইয়া পড়ে। অতএব, বহুবচন প্রয়োগের বৈয়র্থ্যপরিহারার্থে, একবারে বহুভার্য্যাবিবাহই পৈঠীনসির অভিপ্রেত বলিয়া ব্যাখ্যা করিতে হইবেক।

 এ বিষয়ে বক্তব্য এই যে, পৈঠীনসিবাক্যস্থিত ভার্য্যাশব্দ বহুবচনান্ত দেখিয়া, যদি বহুভার্য্যাবিবাহ পৈঠীনসির অভিপ্রেত বলিয়া ব্যবস্থা করিতে হয়; তাহা হইলে, সমান ন্যায়ে, মনুবাক্যস্থিত সবর্ণাশব্দ একবচনান্ত দেখিয়া, একভার্য্যাবিবাহ মনুর অভিপ্রেত বলিয়া ব্যবস্থা করিতে হইবেক; এবং তাহা হইলে, মনুবচনের ও পৈঠীনসিবচনের বিরোধ উপস্থিত হইল; মনু যে স্থলে একভার্য্যাবিবাহের বিধি দিতেছেন, পৈঠীনসি অবিকল সেই স্থলে বহুভার্য্যাবিবাহের বিধি দিতেছেন। এক্ষণে, তর্কবাচস্পতি মহাশয়কে জিজ্ঞাসা করি,

১৫