পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৪
বহুবিবাহ।

 ধর্ম্মসম্পন্না ও পুত্রসম্পন্না স্ত্রী সত্ত্বেও অন্য স্ত্রী বিবাহ করিবেক না, কিন্তু ধর্ম্ম অথবা পুত্রের ব্যাঘাত ঘটিলে করিবেক। এই রূপ নিষেধ করিয়া গিয়াছেন।

 দেখ, মিত্রমিশ্র, অনন্তভট্ট ও কুল্লূকভট্ট, ধর্ম্মসম্পন্না ও পুত্রসম্পন্না স্ত্রী বিদ্যমান থাকিলে আর বিবাহ করিতে পারিবে না, আপস্তম্বসূত্রের এই অর্থ অবলম্বন করিয়া গিয়াছেন; তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের ন্যায়, “অদারে” এই পাঠ, এবং “স্ত্রীবিয়োগ ঘটিলে” এই অর্থ অবলম্বন করেন নাই। এই দুই আপস্তম্বসূত্রের তাৎপর্য্য এই, গৃহস্থ ব্যক্তি শাস্ত্রের বিধি অনুসারে এক স্ত্রীর পাণিগ্রহণ করিয়াছে; যদি ঐ স্ত্রী দ্বারা ধর্ম্মকার্য্য নির্ব্বাহ ও পুত্রলাভ হয়, তাহা হইলে সে ব্যক্তি তাহার জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহ করিতে পারিবে না। কিন্তু, যদি ঐ স্ত্রীর এরূপ কোনও দোষ ঘটে, যে তাহার সহিত ধর্ম্মকার্য্য করা বিধেয় নহে; কিংবা ঐ স্ত্রী বন্ধ্যা, মৃতপুত্রা বা কন্যামাত্রপ্রসবিনী হয়, অর্থাৎ তাহা দ্বারা বংশরক্ষা ও পিণ্ডসংস্থানের উপায় না হয়; তাহা হইলে, তাহার জীবদ্দশায় পুনরায় দারপরিগ্রহ আবশ্যক। মনু ও যাজ্ঞবল্ক্য, বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি নিমিত্ত নির্দ্দেশ করিয়া, পূর্ব্বপরিণীতা স্ত্রীর জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহ করিবার যেরূপ বিধি দিয়াছেন, আপস্তম্বও ধর্ম্মকার্য ও পুত্রলাভের ব্যাঘাতরূপ নিমিত্ত নির্দ্দেশ করিয়া, তদনুরূপ বিধি প্রদান করিয়াছেন। অধিকন্তু, ধর্ম্মকার্য্যের উপযোগিনী ও পুত্রবতী স্ত্রী বিদ্যমান থাকিলে, পুনরায় দারপরিগ্রহ করিতে পারিবেক না, এরূপ স্পষ্ট নিষেধ প্রদর্শন করিয়াছেন। সুতরাং, আপস্তম্বের ঐ নিষেধ দ্বারা, তাদৃশ স্ত্রীর জীবদ্দশায়, যদৃচ্ছাক্রমে বিবাহ করিবার অধিকার থাকিতেছে না। ধর্ম্মসংস্থাপনপ্রবৃত্ত তর্কবাচস্পতি মহাশয় দেখিলেন, আপস্তম্বসূত্রের যে সহজ অর্থ চিরপ্রচলিত আছে, তদ্দারা তাঁহার অভিমত যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহরূপ পরম ধর্ম্মের ব্যাঘাত ঘটে। অতএব, কোনও রূপে অর্থান্তর কল্পনা করিয়া, ধর্ম্মরক্ষা ও