পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
১৪৫

দেশের অমঙ্গল নিবারণ করা আবশ্যক। এই প্রতিজ্ঞারূঢ় হইয়া, ধর্ম্মভীরু, দেশহিতৈষী তর্কবাচস্পতি মহাশয়, অদ্ভুত বুদ্ধিশক্তিপ্রভাবে, আপস্তম্বসূত্রের অদ্ভুত পাঠান্তর ও অর্থান্তর কল্পনা করিয়াছেন। তিনি

ধর্ম্মপ্রজাসম্পন্নে দারে নান্যাং কুর্ব্বীত।

এই সূত্রের অন্তর্গত “দারে” এই পদের পূর্ব্বে সুপ্ত অকারের কল্পনা করিয়াছেন; তদনুসারে,

ধর্ম্মপ্রজাসম্পন্নে হদারে নান্যাং, কুর্ব্বীত।

এইরূপ পাঠ হয়। এই পাঠের অনুযায়ী অর্থ এই, “ধর্ম্মকার্য্যনির্ব্বাহ ও পুত্রলাভ হইলে, যদি অদার অর্থাৎ স্ত্রীবিয়োগ ঘটে, তবে অন্য স্ত্রী বিবাহ করিবেক না”। এইরূপ পাঠান্তর ও অর্থান্তর কল্পনা করিয়া, তর্কবাচস্পতি মহাশয় যে ইষ্টলাভের চেষ্টা করিয়াছেন, তাহা তদ্দ্বারা সিদ্ধ বা প্রতিষিদ্ধ হইতেছে, তাহা অনুধাবন করিয়া দেখেন নাই। আপস্তম্বসূত্রের চিরপ্রচলিত পাঠ ও অর্থ অনুসারে, প্রথমবিবাহিতা স্ত্রীর দ্বারা ধর্ম্মকার্য্যনির্ব্বাহ ও পুত্রলাভ হইলে, তাহার জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহ করিবার অধিকার নাই। তর্কবাচস্পতি মহাশয় যে পাঠান্তর ও অর্থান্তর কল্পনা করিয়াছেন, তদনুসারে, ধর্ম্মকার্য্যনির্ব্বাহ ও পুত্রলাভ হইলে যদি স্ত্রীবিয়োগ ঘটে, তাহা হইলে আর বিবাহ করিবার অধিকার থাকে না। এক্ষণে, সকলে বিবেচনা করিয়া দেখুন, চির প্রচলিত পাঠ ও অর্থ দ্বারা যে নিষেধ প্রতিপন্ন হইয়া থাকে, আর তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের কল্পিত পাঠ ও অর্থ দ্বারা যে নূতন নিষেধ প্রতিপন্ন হইতেছে, এ উভয়ের মধ্যে কোন নিষেধ গুরুতর হইতেছে। পূর্ব্ব নিষেধ দ্বারা, পুত্রবতী ও ধর্ম্মকার্য্যোপযোগিনী স্ত্রীর জীবদ্দশায়, পুনরায় বিবাহ করিবার অধিকার রহিত হইতেছে; তাঁহার উদ্ভাবিত নূতন নিষেধ দ্বারা, পুত্রবতী ও ধর্ম্মকার্য্যোপযোগিনী স্ত্রীর মৃত্যু হইলে, পুনরায় বিবাহ করিবার অধিকার রহিত হইতেছে।