পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
বহুবিবাহ।

যে অবস্থায়, স্ত্রীর মৃত্যু হইলে, পুনরায় বিবাহ করিবার অধিকার থাকিতেছে না, সে অবস্থায়, স্ত্রী বিদ্যমান থাকিলে, যদৃচ্ছাক্রমে পুনরায় বিবাহ করিবার অধিকার থাকা কত দুর শাস্ত্রানুমত বা ন্যায়ানুগত হওয়া সম্ভব, তাহা সকলে অনায়াসে বিবেচনা করিতে পারেন। অতএব, আপস্তম্বের গ্রীবাভঙ্গ করিয়া, তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের কি ইষ্টাপত্তি হইতেছে, বুঝিতে পারা যায় না। তিনি এই আশঙ্কা করিয়াছিলেন, পুত্রবতী ও ধর্ম্মকার্য্যোপযোগিনী স্ত্রীর জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহ করিবার সাক্ষাৎ নিষেধ বিদ্যমান থাকিলে, তাদৃশ স্ত্রী সত্ত্বে যদৃচ্ছাক্রমে যত ইচ্ছা বিবাহ করিবার পথ থাকে না। সেই পথ প্রবল ও পরিষ্কৃত করিবার আশয়ে, আপস্তম্বসূত্রের অদ্ভুত অর্থ উদ্ভাবিত করিয়াছেন। কিন্তু উদ্ভাবিত অর্থ দ্বারা ঐ পথ, পরিষ্কৃত না হইয়া, বরং অধিকতর রুদ্ধ হইয়া উঠিতেছে; তাহা অনুধাবন করিতে পারেন নাই।

 অবলম্বিত অর্থ সমর্থন করিবার নিমিত্ত, তর্কচম্পতি মহাশয় যে যুক্তি প্রদর্শন করিয়াছেন, তাহা এই,

 “পুরুষ জন্ম গ্রহণ করিয়া তিন ঋণে ঋণী হয়, ব্রহ্মচর্য্য দ্বারা ঋষিগণের নিকট, যজ্ঞ দ্বারা দেবগণের নিকট, পুত্র দ্বারা পিতৃগণের নিকট।” এই ত্রিবিধ ঋণ বেদাধ্যয়ন, অগ্নিহোত্রাদি যাগ ও পুত্রোৎপত্তি দ্বারা পরিশোধিত হওয়াতে, গহস্থকর্ত্তব্য সমস্ত সম্পন্ন হইতেছে, সুতরাং আর বিবাহ করিবার আবশ্যকতা থাকিতেছে না।”

এই যুক্তি, পুত্রলাভ ও ধর্ম্মকার্য্যনির্বাহ হইলে, স্ত্রীবিয়োগস্থলে যেরূপ খাটে; স্ত্রীবিদ্যমানস্থলেও অবিকল সেইরূপ খাটিবেক, তাহার কোনও সংশয় নাই। উভয়ত্র ঋণপরিশোধন রূপ হেতু তুল্যরূপে বর্ত্তিতেছে। সুতরাং, আর বিবাহ করিবার আবশ্যকতা না থাকাও উভয় স্থলেই তুল্য রূপে বর্ত্তিতেছে। অতএব, এই যুক্তি দ্বারা,