পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
বহুবিবাহ।

 এই রূপে জীবনের তৃতীয় ভাগ বনে অতিবাহিত করিয়া, সর্ব্বসঙ্গ পরিত্যাগপুর্ব্বক, জীবনের চতুর্থ ভাগে পরিব্রজ্য আশ্রম অবলম্বন করিবেক।

যিনি এই রূপ সময় বিভাগ করিয়া, যথাক্রমে আশ্রমচতুষ্টয় অবলম্বনের ঈদৃশ স্পষ্ট বিধি প্রদান করিয়াছেন; তিনি, গৃহস্থাশ্রম সম্পাদন কালে পুত্রলাভের পর স্ত্রীবিয়োগ ঘটিলে, আর দারপরিগ্রহ না করিয়া, এককালে চতুর্থ আশ্রম অবলম্বনের বিধি দিবেন, এরূপ মীমাংসা নিতান্ত অপসিদ্ধান্ত। তবে, “ঋণত্রয়ের পরিশোধ করিয়া মোক্ষে মনোনিবেশ করিবেক”, এ বিধির তাৎপর্য্য এই যে, ঋণত্রয়ের পরিশোধ না করিয়া মোক্ষপথ অবলম্বন করা সম্পূর্ণ অবৈধ; উক্ত বচনের উত্তরার্দ্ধ দ্বারা ইহাই সুস্পষ্ট প্রতিপন্ন হইতেছে। যথা,

অনপকৃত্য মোক্ষস্তু সেবমানো ব্রজত্যধঃ।

  ঋণ পরিশোধ না করিয়া, মোক্ষপথ অবলম্বন করিলে অধোগতি প্রাপ্ত হয়।

 উল্লিখিত প্রকারে দারপরিগ্রহের নিষেধ ও মোক্ষপথ অবলম্বনের ব্যবস্থা স্থির করিয়া, তর্কবাচস্পতি মহাশয় কহিতেছেন,

 “কিন্তু যদি বিষয়বাসনা নিবৃত্তি না হয়, তবে তাহার ফললাভেব নিমিত্ত বিবাহ করিবেক, ইহা ভঙ্গিক্রমে উক্ত হইয়াছে।”

এ স্থলে তিনি স্পষ্টবাক্যে স্বীকার করিতেছেন, পুত্রলাভ ও ধর্ম্মকার্য্যনির্ব্বাহের পর স্ত্রীবিয়োগ ঘটিলে, যদি ঐ সময়ে বৈরাগ্য না জন্মিয়। থাকে, তাহা হইলে, মোক্ষপথ অবলম্বন না করিয়া, পুনরায় বিবাহ করিবেক। এক্ষণে, সকলে বিবেচনা করিয়া দেখুন, কষ্টকম্পনা দ্বার আপস্তম্বসুত্রের পাঠান্তর ও অর্থান্তর কল্পনা করিয়া, তর্কবাচস্পতি মহাশয় কি অধিক লাভ করিলেন। চিরপ্রচলিত ব্যবস্থা অনুসারে, গৃহস্থাশ্রমসম্পাদন কালে স্ত্রীবিয়োগ ঘটিলে, বৈরাগ্য স্থলে মোক্ষপথ অবলম্বন, বৈরাগ্যের অভাবস্থলে পুনরায় দারপরিগ্রহ, বিহিত আছে;