পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬২
বহুবিবাহ।

 প্রভাবশালী ব্যক্তিদিগের ধর্ম্মলঙ্ঘন ও অবৈধ আচরণ দেখতে
 পাওয়া যায়। সর্ব্বভোজী অগ্নির ন্যায়, তেজীয়ানদিগের তাহাতে
 দোষস্পর্শ হয় না॥ ৩॥ সামান্য ব্যক্তি কদাচ মনেও তাদৃশ কর্ম্মের
 অনুষ্ঠান করবে না; মূঢ়তা বশতঃ অনুষ্ঠান করিলে বিনাশপ্রাপ্ত
 হয়। শিব সমুদ্রোৎপন্ন বিষ পান করিয়াছিলেন; সামান্য লোক
 বিষ পান করলে বিনাশ অবধারিত॥ ৩১॥ প্রভাবশালী ব্যক্তিদিগের
 উপদেশ মাননীয়, কোনও কোনও স্থলে তাঁহাদের আচারও মাননীয়।
 তাঁহাদের যে সমস্ত আচার তাঁহাদের উপদেশবাক্যের
 অনুযায়ী, বুদ্ধিমান্ ব্যক্তি সেই সকল আচারের অনুসরণ করিবেক।

এই সকল শাস্ত্র দ্বারা স্পষ্ট প্রতিপন্ন হইতেছে, পূর্ব্বকালীন মহৎ ব্যক্তিদের আচার মাত্রই সদাচার নহে। তাঁঁহাদের যে সকল আচার শাস্ত্রীয় বিধি নিষেধের অনুযায়ী, তাহাই সদাচার। আর তাঁহাদের যে সকল আচার শাস্ত্রীয় বিধি নিষেধের বিপরীত, তাহা সদাচারশব্দ- বাচ্য নহে। পূর্ব্বে প্রতিপাদিত হইয়াছে, বিবাহবিষয়ে যথেচ্ছাচার শাস্ত্রীয় বিধি নিষেধের বিপরীত ব্যবস্থার; সুতরাং, পূর্ব্বকালীন লোকদিগের তাদৃশ যথেচ্ছাচার সদাচার বলিয়া পরিগৃহীত করা ও তদনুসারে চলা কদাচ উচিত নহে।

তর্কবাচস্পতি মহাশয়, স্বীয় মীমাংসার সমর্থনমানসে, যুক্তি- প্রদর্শন করিতেছেন,

 "ঘদি কশ্যপাদয়ঃ স্বয়ং স্মৃতিপ্রণেতারঃ বহুভার্য্যাবেদনমশা-
 স্ত্রীয়মিতি জানীয়ুঃ কপং তত্র প্রবর্ত্তেরন্। অতন্তেষামাচারদর্শনে-
 নৈব উপদর্শিতপ্রকার এব শাস্ত্রার্থঃ নান্যথেত্যবধার্য্যতে” (৪০)।

 যদি নিজে ধর্মশাস্ত্রপ্রবর্তক কশ্যপপ্রভৃৃতি বহুভার্ষ্যাবিবাহ
 অশাস্ত্রীয়বোধ করিতেন, তাহা হইলে, কেন তাহাতে প্রবৃত্ত
 হইতেন। অতএব, তাঁহাদের আচার দর্শনেই অবধারিত হইতেছে,
 আমি যেরূপ ব্যাখ্যা করিয়াছি, তাহাই যথার্থ শাস্ত্রার্থ।

ইহার তাৎপর্য্য্ এই, যাঁহারা লোকহিতার্থে ধর্ম্মশাস্ত্রের সৃষ্টি করিয়াছেন,


[১]

  1. বহুৰিবাহবাদ, ২৮ পৃষ্ঠা।