পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৮
বহুবিবাহ।

অপ্রাপ্তি ঘটিলে, অসবর্ণাবিবাহের বিধি ও ব্যবস্থা আছে; সুতরাং, সবর্ণা কন্যার প্রাপ্তি সম্ভবিলে, গৃহস্থব্যক্তিকে গৃহস্থঘর্ম্মনির্ব্বহার্থে সর্ব্বপ্রথম সবর্ণাবিবাহই করিতে হয়। তদনুসারে, এক ব্যক্তি গৃহস্থধর্ম্মনির্ব্বহার্থে প্রথমে যথাবিধি সবর্ণবিবাহ করিয়াছে। তৎপরে, কামবশতঃ ঐ ব্যক্তির অসবর্ণাবিবাহে ইচ্ছা হইল। এক্ষণে, সামশ্রমী মহাশয়ের ব্যাখ্যা অনুসারে, অসবর্ণাবিবাহ করিবার পূর্ব্বে, সে ব্যক্তিকে অগ্রে আর একটি সবর্ণাবিবাহ করিতে হইবেক। তর্কবাচস্পতিপ্রকরণে নির্বিবাদে প্রতিপাদিত হইয়াছে, ধর্ম্মার্থে সবর্ণাবিবাহ ও কামার্থে অসবর্ণাবিবাহ শাস্ত্রকারদিগের অনুমোদিত কার্য্য; তদনুসারে, অগ্রে সবর্ণাবিবাহ অবশ্য কর্ত্তব্য; সবর্ণাবিবাহ করিয়া, কামবশতঃ পুনরায় বিবাহ করিতে ইচ্ছা হইলে, অসবর্ণাবিবাহ করিবেক, কদাচ সবর্ণাবিবাহ করিতে পরিবেক না; সুতরাং, যদৃচ্ছা স্থলে সবর্ণাবিবাহ একবারে নিষিদ্ধ হইয়াছে। এমন স্থলে, কামবশতঃ অসবর্ণাবিবাহে ইচ্ছা হইলে, দ্বিজাতিদিগকে অগ্রে আর একটি সবর্ণাবিবাহ করিতে হইবেক, এ কথা নিতান্ত হেয় ও আশ্রদ্ধেয়। আর, যদি তদীয় ব্যাখ্যার এরূপ তাৎপর্য্য হয়, দ্বিজাতিদিগের পক্ষে প্রথমে সবর্ণাবিবাহই কর্ত্তব্য; তৎপরে কামবশতঃ বিবাহ করিতে ইচ্ছা হইলে অসবর্ণাবিবাহই কর্ত্তব্য; তাহা হইলে, তদর্থে এতাদৃশ বক্র পথ আশ্রয় করিবার কোনও প্রয়োজন ছিল না; কারণ, চিরপ্রচলিত সহজ অর্থ দ্বারাই তাহা সম্যক্ সম্পন্ন হইতেছে। বোধ হয়, সামশ্রমী মহাশয় কখনও ধর্ম্মশাস্ত্রের অধ্যয়ন ও অনুশীলন করেন নাই; তাহা করিলে, কেবল বুদ্ধিবল অবলম্বন পূর্ব্বক, অকারণে মনুবচনের ঈদৃশ অসঙ্গত ও অসম্ভব অর্থান্তর কল্পনায় প্রবৃত্ত হইতেন না।

 সামশ্রমী মহাশয়, বচনের এইরূপ অর্থ কল্পনা করিয়া, ঐ অর্থের বলে যে তাৎপর্য্য ব্যাখ্যা করিয়াছেন, তাহা এই, –

 “বিদ্যাসাগর মহাশয় এই বিধিটিকে পরিসংখ্যা করিয়া