পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৮
বহুবিবাহ।

 সামশ্রমী মহাশয়ের চতুর্থ আপত্তি এই;–

 “বহুবিবাহের বিধি অন্বেষণীয় নহে। যখন ইহা আর্য্যাবর্ত্তের প্রায় সকল প্রদেশেই প্রচলিত আছে, শাস্ত্রত নিষিদ্ধ বলিয়া প্রতিপন্ন হইতেছে না, তখন ইহাকে শাস্ত্রসম্মত বলিয়া স্থিরকরণার্থ বিশেষশাস্ত্রানুসন্ধানে বা ধীসহকৃত কালব্যয়ে প্রবৃত্ত হওয়া নিতান্ত নিম্প্রয়োজন; যাহার নিষেধ নাই অথচ ব্যবহার আছে, তাহার বিধি অন্বেষণের কোন আবশ্যক নাই। তথাপি বহুবিবাহবিষয়কবিচার এইটি শ্রুতমাত্র যে একটি শ্রৌত প্রমাণ হঠাৎ স্বগত হুইয়াছিল, তাহার উল্লেখ না করিয়া ক্ষান্ত থাকিতে পারি না’[১]

 “বহুবিবাহের বিধি অন্বেষণীয় নহে,” কারণ, অন্বেষণে প্রবৃত্ত হইলে কৃতকার্য্য হইবার সম্ভাবনা নাই। “যখন ইহা আর্য্যাবর্ত্তের প্রায় সকল প্রদেশেই প্রচলিত আছে, শাস্ত্রত নিষিদ্ধ বলিয়া প্রতিপন্ন হইতেছে না, তখন ইহাকে শাস্ত্রসম্মত বলিয়া স্থির করণার্থ বিশেষ শাস্ত্রানুসন্ধানে বা ধীসহকৃত কালব্যয়ে প্রবৃত্ত হওয়া নিতান্ত নিম্প্রয়োজন”। বহুবিবাহ “আর্য্যাবর্ত্তের প্রায় সকল প্রদেশেই প্রচলিত আছে”, সামশ্রমী মহাশয়ের এই নির্দেশ অসঙ্গত নহে কিন্তু “শাস্ত্রত নিষিদ্ধ বলিয়া প্রতিপন্ন হইতেছে না”, তিনি এরূপ নির্দেশ করিতে কত দূর সমর্থ, বলিতে পারা যায় না। যিনি ধর্ম্মশাস্ত্রের প্রকৃত প্রস্তাবে অধ্যয়ন, ও সবিশেষ যত্নসহকারে অনুশীলন করিয়াছেন, তাদৃশ ব্যক্তি যথোচিত পরিশ্রম ও বুদ্ধিচালনা পূর্ব্বক, কিছু কাল অনন্যমনা ও অনন্যকর্ম্মা হইয়া অনুসন্ধান করিলে, এতাদৃশ নির্দ্দেশে সমর্থ হইতে পারেন। সামশ্রমী মহাশয় রীতিমত ধর্ম্মশাস্ত্রের অধ্যয়ন ও অনুশীলন করিয়াছেন, অথবা বহুবিবাহ শাস্ত্রসিদ্ধ কি না এতদ্বিষয়ে যথোপযুক্ত অনুসন্ধান করিয়া দেখিয়াছেন, তাহার কোনও নিদর্শন

  1. (১১)বহুবিবাহবিচারসমালোচনা, ১৫ পৃষ্ঠা।