পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
২০৩

ঋষীনধ্যাসিতবতী সপ্ত ধর্ম্মভৃতাং বরা। তথৈব মুনিজা বার্ক্ষী তপোভির্ভাবিতাত্মনঃ। সঙ্গতাভূরদ্দশ ভ্রাতৃনেকাম্নঃ প্রচেতসঃ (১৭)॥

 যুধিষ্ঠির কহিলেন,

 আমার মুখ হইতে মিথ্যা নির্গত হয় না; আমার বুদ্ধি অধর্ম্ম-
 পথে ধাবিত হয় না; এ বিষয়ে আমার প্রবৃত্তি হইতেছে; ইহা
 কোনও মতে অধর্ম্ম নহে। পুরাণেও নিতে পাওয়া যায়, নিরতিশয়
 ধর্ম্মপরায়ণা গোতমকুলোদ্ভবা জটিলা সপ্ত ঋষির পাণিগ্রহণ
 করিয়াছিলেন; আর, মুনিকন্যা বার্ক্ষী প্রচেতানামক তপঃপরায়ণ
 দশ ভ্রাতার ভার্য্যা হইয়াছিলেন।

সামশ্রমী মহাশয় যে আখ্যানটিকে উল্লিখিত বেদবাক্যের সাক্ষাৎ উদাহরণস্বরূপ নির্দ্দেশ করিয়াছেন, উপরি নির্দ্দিষ্ট যুধিষ্ঠিরবাক্যও সেই আখ্যানটির এক অংশ। আখ্যানের অন্তর্গত দ্রুপদরাজার উক্তিতে ব্যক্ত হইতেছে, পুরুষের বহুভার্য্যাবিবাহ বিহিত, স্ত্রীলোকের বহু পতি শুনিতে পাওয়া যায় না; স্ত্রীলোকের বহুপতিবিবাহ অধর্ম্মকর ব্যবহার, ধর্ম্মজ্ঞ ব্যক্তির হাতে প্রবৃত্ত হওয়া উচিত নহে। আর, যুধিষ্ঠিরের উক্তিতে ব্যক্ত হইতেছে, জটিলা ও বার্ক্ষী এই দুই মুনিক; যথাক্রমে সাত ও দশ পতি বিবাহ করিয়াছিলেন। স্ত্রীলোকের বহুপতিবিবাহ কোনও মতে অধর্ম্মকর ব্যবহার নহে। এক্ষণে, সামশ্রমী মহাশয় স্থির চিত্তে বিবেচনা করিয়া দেখুন, তাঁহার উল্লিখিত আখ্যানটির যুধিষ্ঠিরোক্তিরূপ অংশ দ্বারা তাঁহার অবলম্বিত বেদবাক্যের সমর্থন হইতেছে কি না। বেদবাক্যের পুর্ব্বার্দ্ধে পুরুষের বহুভার্য্যাবিবাহ বৈধ, উত্তরার্দ্ধে স্ত্রীলোকের বহুপতি বিবাহ অবৈধ, বলিয়া উল্লেখ আছে; দ্রুপদ রাজার উক্তি দ্বারা ঐ উল্লখের সম্পূর্ণ সমর্থন হইতেছে, সন্দেহ নাই। কিন্তু যুধিষ্ঠির, বার্ক্ষী ও জটিলা এই


[১]

  1. (১৭) মহাভারত, আদিপর্ব, ১৯৬ অধ্যায়।