পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
২০৫

করিলে, অধিকতর সঙ্গত হয় কি না, সামশ্রমী মহাশয় কিঞ্চিৎ স্থির ও সরল চিত্তে বিবেচনা করিয়া দেখিবেন। সে যাহা হউক, ভারতীয় আখ্যানের যে অংশ আপন অভিপ্রায়ের অনুকূল বোধ হইয়াছে, সামশ্রমী মহাশয় প্রফুল্ল চিত্তে তন্মাত্র উদ্ধৃত করিয়াছেন। কিন্তু, যখন তিনি ধর্ম্মশাস্ত্রের মীমাংসায় প্রবৃত্ত হইয়াছেন, তখন অনুকূল ও প্রতিকূল উভন্ন অংশ উদ্ধৃত করিয়া, সমাধান করাই উচিত ও আবশ্যক ছিল। যখন আখ্যানটি পাঠ করিয়াছিলেন, সে সময়ে প্রতিকূল অংশ তাঁহার দৃষ্টিপথে, পতিত হয় নাই, ইহা কোনও ক্রমে সম্ভব বা সঙ্গত বোধ হয় না।

 “সহৃদয় মহোদয়গণ! নিষ্পক্ষান্তঃকরণে দেখিবেন, এই আখ্যানটিতে কি বিবাহান্তরে পত্নীর বন্ধ্যাত্বের বা অসবর্ণাত্বের অপেক্ষা আছে বলিয়া বোধ হয়”। এ স্থলে বক্তব্য এই যে, এই আখ্যানের অন্তর্গত ষড়্‌বিংশ শ্লোকে, এক ব্যক্তির একাধিক বিবাহ বিহিত, এতন্মাত্র নির্দ্দেশ আছে; ঐ একাধিক বিবাহ শাস্ত্রোক্ত নিমিত্ত নিবন্ধন, অথবা যদৃচ্ছামূলক, তাহার কোনও নিদর্শন নাই। এমন স্থলে, যাঁহারা পক্ষপাতশূন্য হৃদয়ে বিবেচনা করিবেন, তাঁহারা এই অখ্যানটিতে বিবাহান্তরে পত্নীর বন্ধ্যাত্বের বা অসবর্ণাত্বের অপেক্ষা আছে কি না, কিছুই অবধারিত বলিতে পারিবেন না। এক ব্যক্তির একাধিক বিবাহ বিহিত, এতন্মাত্র নির্দ্দেশ দেখিয়া, একতর পক্ষ নির্ণয় করিয়া মত প্রকাশ করা বিবেচনাসিদ্ধ হইতে পারে না। যাহা হউক, যদিও এ স্থলে কোনও বিশেষ নির্দ্দেশ নাই; কিন্তু, ধর্ম্মশাস্ত্র প্রবর্ত্তক মনু, যাজ্ঞবল্ক্য প্রভৃতি মহর্ষিগণ কৃতদার ব্যক্তির দ্বিতীয়াদি বিবাহপক্ষে স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি নিমিত্ত নির্দ্দেশ করিয়া সবর্ণাবিবাহের, এবং যদৃচ্ছাপক্ষে সবর্ণা- বিবাহ নিষেধপূর্ব্বক অসবর্ণাবিবাহের, বিধি প্রদর্শন করিয়াছেন; এই বিধির সহিত একবাক্যতা সম্পাদন করিয়া দেখিলে, অপক্ষপাতী মহোদয়দিগকে অবশ্যই স্বীকার করিতে হইবেক, পূর্ব্বপরিণীতা স্ত্রীর