পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কবিরত্নপ্রকরণ

 মুরশিদাবাদনিবাসী শ্রীযুত গঙ্গাধর রায় কবিরাজ কবিরত্ন বহুবিবাহবিষয়ে যে পুস্তক প্রচার করিয়াছেন, তাহার নাম “বহুবিবাহরাহিত্যারাহিত্যনির্ণয়”। যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহকাণ্ড শাস্ত্রবহির্ভূত ব্যবহার বলিয়া, আমি যে ব্যবস্থা প্রচার করিয়াছিলাম, তদ্দর্শনে নিতান্ত অসহিষ্ণু হইয়া, কবিরত্ন মহাশয় তাদৃশ বিবাহব্যবহারের শাস্ত্রীয়তা সংস্থাপনে প্রবৃত্ত হইয়াছেন। যিনি যে বিষয়ের ব্যবসায়ী নহেন, সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিলে, তাঁহার যেরূপ কৃতকার্য্য হওয়া সম্ভব, তাহা অনায়াসে অনুমান করিতে পারা যায়। কবিরত্ন মহাশয় ধর্ম্মশাস্ত্রব্যবসায়ী নহেন; সুতরাং, ধর্ম্মশাস্ত্রের মীমাংসায় বদ্ধপরিকর হইয়া, তিনি কিরূপ কৃতকার্য্য হইয়াছেন; তাহা অনুমান করা দুরূহ ব্যাপার নহে। অনেকেই মনে করেন, ধর্ম্মশাস্ত্র অতি সরল শাস্ত্র। বিশিষ্টরূপ অনুশীলন না করিলেও, ধর্ম্মশাস্ত্রের মীমাংসা করা কঠিন কর্ম্ম নহে। এই সংস্কারের বশবর্তী হইয়া, তাঁহারা, উপলক্ষ উপস্থিত হইলেই, ধর্ম্মশাস্ত্রের বিচারে ও মীমাংসায় প্রবৃত্ত হইয়া থাকেন। কিন্তু, সেরূপ সংস্কার নিরবচ্ছিন্ন ভ্রান্তিমাত্র। ধর্ম্মশাস্ত্র বহুবিস্তৃত ও অতি দুরূহ শাস্ত্র। যাঁহারা অবিশ্রামে ব্যবসায় করিয়া জীবনকাল অতিবাহিত করিয়াছেন, তাঁহারও ধর্ম্মশাস্ত্র বিষয়ে পারদর্শী নহেন, এরূপ নির্দ্দেশ করিলে, বোধ করি, অসঙ্গত বলা হয় না। এমন স্থলে, কেবল বিদ্যাবলে ও বুদ্ধিকৌশলে, ধর্ম্মশাস্ত্রবিচারে প্রবৃত্ত হইয়া, সম্যক্ কৃতকার্য্য হওয়া কোনও মতে সম্ভাবিত নহে। শ্রীযুত তারানাথ তর্কবাচস্পতি ও শ্রীযুত গঙ্গাধর কবিরত্ন এ বিষয়ের উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত