পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১২
বহুবিবাহ।

শূদ্রৈব ভার্য্যা শূদ্রস্য সা চ স্বা চ বিশঃ স্মৃতে।
তে চ স্বাচৈব রাজ্ঞশ্চ তাশ্চ স্বাচাগ্রজন্মনঃ।

 এই বচনদ্বয়ের ব্যাখ্যা করিয়াছেন, দ্বিজাতির পক্ষে অগ্রে সবর্ণাবিবাহই বিহিত বিবাহই এই অবধারণ ব্যাখ্যায় অসবর্ণাবিবাহ অগ্রে বিধি নহে। যদি এই অর্থ হয়, তবে প্রশস্তা শব্দোপাদানের প্রয়োজন কি। সবর্ণৈব দ্বিজাতীনামগ্রে স্যাদ্দারকর্ম্মণি, এই পাঠে তদর্থ সিদ্ধি হয়। অতএব ও অর্থ যথার্থ নহে। যথার্থ ব্যখ্যা এই, দ্বিজাতীনামগ্রে দারকর্ম্মণি সবর্ণা স্ত্রী প্রশস্তা স্যাৎ অসবর্ণা তু অগ্রে দারকর্ম্মণি অপ্রশস্তা ন তু প্রতিষিদ্ধা দ্বিজাতীনাং সবর্ণাসবর্ণাবিবাহস্য সামান্যতো বিধের্বক্ষ্যমাণত্বাৎ। ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয়বৈশ্যের ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমানন্তর গার্হ্যস্থাশ্রমকরণে প্রথমতঃসবর্ণা কন্যা বিবাহে প্রশস্তা, অসবর্ণা কন্যা অপ্রশস্তা কিন্তু নিষিদ্ধ নহে; যে হেতু সবর্ণাসবর্ণে সামান্যতো বিবাহবিধান আছে; প্রশস্তাপদগ্রহণে এই অর্থ ও তাৎপর্য্য জানাইয়াছেন[১]

ধর্ম্মশাস্ত্রব্যবসায়ী হইলে, কবিরত্ন মহাশয়, এবংবিধ অসঙ্গত আস্ফালনপূর্ব্বক, ঈদৃশ অদৃষ্টচর ও অশ্রুতপূর্ব্ব ব্যবস্থা প্রচার করিতেন, এরূপ বোধ হয় না। ধর্ম্মশাস্ত্রে দৃষ্টি নাই, বহুদর্শন নাই; সুতরাং, মনুবচনের অর্থবোধ ও তাৎপর্য্যগ্রহ করিতে পারেন নাই; এজন্যই তিনি, আমার অবলম্বিত চিরপ্রচলিত যথার্থ ব্যাখ্যাকে অযথার্থ ব্যাখ্যা বলিয়া, অবলীলাক্রমে নির্দ্দেশ করিয়াছেন।

 সবর্ণাগ্রে দ্বিজাতীনাং প্রশস্তা দারকর্ম্মণি।

 দ্বিজাতিদিগের প্রথম বিবাহে সবর্ণা কন্যা প্রশস্তা।

এই মনুবচনে প্রশস্তাপদ প্রযুক্ত আছে। প্রশস্তশব্দ অনেক স্থলে “উৎকৃষ্ট” এই অর্থে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। এই অর্থকেই ঐ শব্দের একমাত্র অর্থ স্থির করিয়া, কবিরত্ন মহাশয় ব্যবস্থা করিয়াছেন, যখন


  1. বহুবিবাহরাহিত্যরাহিত্যনির্ণয়, ৮ পৃষ্ঠা।