পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৬
বহুবিবাহ।

জাতিও প্রথমে অসবর্ণবিবাহ করিয়াছেন। যযাতি রাজা শুক্রের কন্যা দেবজানীকে বিবাহ করেন[১]

এ বিষয়ে বক্তব্য এই যে, যখন শাস্ত্রে স্পষ্ট ও প্রত্যক্ষ নিষেধ দৃষ্ট হইতেছে, তখন কোনও কোনও মহর্ষি প্রথমে অসবর্ণ বিবাহ করিয়াছিলেন, অতএব তাদৃশ বিবাহ নিষিদ্ধ নহে, এরূপ অনুমানসিদ্ধ ব্যবস্থা গ্রাহ্য হইতে পারে না। সে যাহা হউক, কবিরত্ন মহাশয়ের উল্লিখিত একটি উদাহরণ দেখিয়া, আমি চমৎকৃত হইয়াছি। সেই উদাহরণ এই; “যযাতি রাজা শুক্রের কন্যা দেবজানীকে বিবাহ করেন”। যযাতি রাজা ক্ষত্রিয়, শুক্রাচার্য্য ব্রাহ্মণ; যযাতি ক্ষত্রিয় হইয়া ব্রাহ্মণকন্যা বিবাহ করিয়াছিলেন। কি আশ্চর্য্য! কবিরত্ন মহাশয়ের মতে এ বিবাহও নিষিদ্ধ ও অবৈধ নহে। ইহা, বোধ করি, এ দেশের সর্ব্বসাধারণ লোকে অবগত আছেন, বিবাহ দ্বিবিধ অনুলোম বিবাহ ও প্রতিলোম বিবাহ। উৎকৃষ্ট বর্ণ নিকৃষ্ট বর্ণের কন্যা বিবাহ করিলে ঐ বিবাহকে অনুলোম বিবাহ, আর, নিকৃষ্ট বর্ণ উৎকৃষ্ট বর্ণের কন্যা বিবাহ করিলে ঐ বিবাহকে প্রতিলোম বিবাহ বলে। স্থলবিশেষে অনুলোম বিবাহ শাস্ত্রবিহিত; সকল স্থলেই প্রতিলোম বিবাহ সর্ব্বতোভাবে শাস্ত্রনিষিদ্ধ।

 ১। নারদ কহিয়াছেন,

আনুলোম্যেন বর্ণানাং যজ্জন্ম স বিধিঃ স্মৃতঃ।
প্রাতিলোম্যেন যজ্জম্ম স জ্ঞেয়ো বর্ণসঙ্করঃ[২]

 ব্রাহ্মণাদিবর্ণের অনুলোমক্রমে যে জন্ম, তাহাই বিধি বলিয়া পরিগণিত; প্রতিলোমক্রমে যে জন্ম তাহাকে বর্ণসঙ্কর বলে।

 ২। ব্যাস কহিয়াছেন,

  1. বহুবিবাহরাহিত্যরাহিত্যনির্ণয়, ১০ পৃষ্ঠা।}}
  2. নারদসংহিতা, দাদ্বশ বিবাদপদ।