পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
২৪৭

রহিতের বাসন সিদ্ধ করিতে হয় তবে শাস্ত্রাবলম্বন ত্যাগ করুন “। —যিনি কোনও কালে ধর্ম্মশাস্ত্রের অধ্যয়ন ও অনুশীলন করেন নাই; সুতরাং, ঋষিবাক্যের অর্থবোধে ও তাৎপর্য্যগ্রহে সম্পূর্ণ অসমর্থ, তাদৃশ ব্যক্তির মুখে ঈদৃশ উপদেশবাক্য শ্রবণ করিলে, শরীর পুলকিত হয়। অনন্যমনাঃ ও অনন্যকর্ম্ম হইয়া, জীবনের অবশিষ্ট ভাগ ধর্ম্মশাস্ত্রের অনুশীলনে অতিবাহিত করিলেও, তাহার ঈদৃশ উপদেশ দিবার অধিকার জন্মিবেক কি না, সন্দেহ স্থল; এমন স্থলে, অর্থগ্রহ ব্যতিরেকে দুই চারিটি বচন অবলম্বন করিয়া, ধর্ম্মশাস্ত্রে সর্বজ্ঞ হইয়াছি এই ভাবিয়া, “শাস্ত্রাবলম্বন পরিত্যাগ করুন,” অম্লানমুখে এতাদৃশ উপদেশ দিতে উদ্যত হওয়া সাতিশয় আশ্চর্ষ্যের ও নিরতিশয় কৌতুকের বিষয় বলিতে হইবেক।–“শাস্ত্রের যথার্থ ব্যাখ্যা না করিয়া ব্যাখ্যান্তর করিয়া মুর্খদিগকে বুঝাইয়া শাস্ত্রসম্মত কর্ম্ম বলিয়া প্রকাশ করার অবশ্যক কি” –যদি এরূপ রাজাজ্ঞা প্রচারিত থাকিত, পূর্বে বঙ্গদেশবাসী, অধুনা মুরশিদাবাদনিবাসী, সর্ব্বশাস্ত্রদর্শী, চিকিৎসাব্যবসায়ী, শ্রীযুত গঙ্গাধর রায় কবিরাজ কবিরত্ন মহোদয় যে স্মৃতিবচনের যে অর্থ যথার্থ বা অযথার্থ বলিয়া অভিপ্রায় প্রকাশ করিবেন; অদ্যাবধি, দ্বিরুক্তি না করিয়া, ঐ বচনের ঐ অর্থ যথার্থ বা অযথার্থ বলিয়া ভারতবর্ষবাসী লোকদিগকে শিরোধার্য্য করিতে হইবেক; তাহা হইলে, আমি যে সকল ব্যাখ্যা লিখিয়াছি, সে সমস্ত যথার্থ নহে, তদীয় এই সিদ্ধান্ত নির্বিবাদে অঙ্গীকৃত হইতে পারিত। কিন্তু, সৌভাগ্যক্রমে, সেরূপ রাজাজ্ঞা প্রচারিত নাই; সুতরাং, অকুতোভয়ে নির্দেশ করিতেছি, আমি, শাস্ত্রের অযথার্থ ব্যাখ্যা লিথিয়া, লোককে প্রতারণা করিবার নিমিত্ত প্রয়াস পাই নাই। পূর্বে নির্দেশ করিয়াছি এবং এক্ষণেও নির্দেশ করিতেছি, কবিরাজ মহাশয় ধর্ম্মশাস্ত্রে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ, চিকিৎসা বিষয়ে কিরূপ বলিতে পারি না, কিন্তু ধর্ম্মশাস্ত্র বিষয়ে তাঁহার কিছুমাত্র নাড়ীজ্ঞান নাই;