পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
বহুবিবাহ।

বিহিত বিষয়ের অতিরিক্ত স্থলে নিষেধ সিদ্ধ হয়, এবং বিহিত স্থলে বিধি অনুযায়ী কার্য্য করা সম্পূর্ণ ইচ্ছাধীন থাকে, তাহাকে পরিসংখ্যাবিধি বলে; যেমন, “পঞ্চ পঞ্চনখা ভক্ষ্যাঃ,” পাঁচটি পঞ্চনখ ভক্ষণীয়। লোকে যদৃচ্ছাক্রমে যাবতীয় পঞ্চনখ জন্তু ভক্ষণ করিতে পারিত; কিন্তু “পঞ্চ পঞ্চমখা ভক্ষ্যাঃ,” এই বিধি দ্বারা বিহিত শশ প্রভৃতি পঞ্চ ব্যতিরিক্ত কুকুরাদি যাবতীয় পঞ্চনখ জন্তুর ভক্ষণনিষেধ সিদ্ধ হইতেছে। অর্থাৎ, লোকের পঞ্চনখ জন্তুর মাংসভক্ষণে প্রবৃত্তি হইলে, শশ প্রভৃতি পঞ্চ ব্যতিরিক্ত পঞ্চনখ জন্তুর মাংসভক্ষণ করিতে পারিবেক না; শশ প্রভৃতি পঞ্চনখ জন্তুর মাংসভক্ষণও লোকের সম্পূর্ণ ইচ্ছাধীন; ইচ্ছা হয় ভক্ষণ করিবেক, ইচ্ছা না হয় ভক্ষণ করিবেক না। সেইরূপ, যদৃচ্ছাক্রমে অধিক বিবাহে উদ্যত পুরুষ সবর্ণা অসবর্ণা উভয়বিধ স্ত্রীরই পাণিগ্রহণ করিতে পারিত; কিন্তু, যদৃচ্ছাক্রমে বিবাহে প্রবৃত্ত হইলে, অসবর্ণবিবাহ করিবেক, এই বিধি প্রদর্শিত হওয়াতে, যদৃচ্ছাস্থলে অসবর্ণাব্যতিরিক্তবিবাহনিষেধ সিদ্ধ হইতেছে। অসবর্ণাবিবাহও লোকের ইচ্ছাধীন, ইচ্ছা হয় তাদৃশ বিবাহ করিবেক, ইচ্ছা না হয় করিবেক না; কিন্তু যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত হইয়া বিবাহ করিতে হইলে, অসবর্ণা ব্যতিরিক্ত বিবাহ করিতে পারিবে না, ইহাই বিবাহবিষয়ক চতুর্থ বিধির উদ্দেশ্য। এই বিবাহবিধিকে অপূর্ব্ববিধি বলা যাইতে পারে না; কারণ, ঈদৃশ বিবাহ রাগ প্রাপ্ত, অর্থাৎ লোকের ইচ্ছাবশতঃ প্রাপ্ত হইতেছে; যাহা কোনও রূপে প্রাপ্ত নহে, তদ্বিবয়ক বিধিকেই অপুর্ব্ববিধি বলে। এই বিবাহবিধিকে নিয়মবিধি বলা যাইতে পারে; কারণ, ইহা দ্বারা অসবর্ণাবিবাহ অবশ্যকর্তব্য বলিয়া নিয়মবদ্ধ হইতেছে না। সুতরাং, এই বিবাহবিধিকে অগত্যা পরিসংখ্যাবিধি বলিয়া অঙ্গীকার করিতে হইবেক[১]।”

  1. বিনিয়োগবিধিবপ্যপূর্ব্ববিধিনিয়মবিধিপরিসংখ্যাবিধিভেদাত্রিবিধঃ