পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
বহুবিবাহ।

নিরবচ্ছিন্ন ভ্রান্তি মাত্র। মনুবচনের প্রকৃত পাঠ ও প্রকৃত অর্থ কি, সে বোধ না থাকাতেই, তাঁহার মনে তাদৃশ বিষম কুসংস্কার জন্মিয়া আছে। তিনি মনুবচনোক্ত বিবাহবিধিকে অপুর্ব্ববিধিই বলুন, নিয়ম- বিধিই বলুন, আর পরিসংখ্যাবিধিই বলুন, উহা দ্বারা কামস্থলে অসবর্ণাবিবাহই প্রতিপন্ন হইবেক, যদৃচ্ছাক্রমে যত ইচ্ছা সবর্ণা ও অসবর্ণা বিবাহ কোনও মতে প্রতিপন্ন হইতে পারিবেক না। তর্ক- বাচস্পতি মহাশয় মনে করুন, তিনি এই বিবাহবিধির পরিসংখ্যাত্ব- খণ্ডনে ও অপূর্ব্ববিধিত্বসংস্থাপনে কৃতকার্য্য হইয়াছেন। কিন্তু আমি তাহাতে তাঁহার কোনও ইষ্টাপত্তি দেখিতেছি না। পূর্ব্বে নির্বিবাদে প্রতিপাদিত হইয়াছে,

 সবর্ণাগ্রে দ্বিজাতীনাং প্রশস্তা দারকরর্ম্মারণি।
 কামতন্তু প্রবৃত্তানামিমাঃ স্যুঃ ক্রমশোহবরা। ৩।১২।

 দ্বিজাতিদিগের প্রথম বিবাহে সবর্ণা কন্যা বিহিতা; কিন্তু যাহারা
 কামবশতঃ বিবাহে প্রবৃত্ত হয়, তাহারা অনুলোমক্রমে অসবর্ণা
 বিবাহ করিবেক।

এই মনুবচন দ্বারা যদৃচ্ছাস্থলে কেবল অসবর্ণাবিবাহ বিহিত হইয়াছে। যদি এই বিবাহবিধিকে অপূর্ব্ববিধি বলিয়া অঙ্গীকার করা যায়, তাহা হইলে, কামবশতঃ বিবাহপ্রবৃত্ত পুরুষ অসবর্ণা কন্যা বিবাহ করিবেক, এইরূপ অসবর্ণবিবাহের সাক্ষাৎ বিধি পাওয়া যাইবেক; পরিসংখ্যার ন্যায়, অসবর্ণাব্যতিরিক্ত বিবাহ করিবেক না, এরূপ নিষেধ বোধিত হইবেক না। যদি কামস্থলে সবর্ণা ও অসবর্ণা উভয়বিধস্ত্রীবিবাহ মনুবচনের অভিপ্রেত হইত, তাহা হইলে তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের ইষ্টসিদ্ধি ঘটিতে পারিত; অর্থাৎ, সবর্ণা ও অসবর্ণা উভয়বিধস্ত্রী- বিবাহের সাক্ষাৎ বিধি পাওয়া যাইত, এবং তাহা হইলেই, যদৃচ্ছাক্রমে যত ইচ্ছা সবর্ণা ও অসবর্ণা বিবাহ অনায়াসে সিদ্ধ হইত। কিন্তু পূর্ব্বে নিঃসরিত রূপে প্রতিপাদিত হইয়াছে, অসবর্ণাবিবাহ বিধানই মনু-