পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
বহুবিবাহ।

গ্রাহ্য হইতে পারে না। এ বিষয়ে বক্তব্য এই যে, প্রথম পুস্তকে আমি এ বিষয়ের সবিস্তর বিচার ও প্রমাণ প্রদর্শন করি নাই, তাহার কারণ এই যে, ধর্ম্মার্থ বিবাহের নিত্যত্ব সকলেই স্বীকার করিয়া থাকেন, সে বিষয়ে কাহারও বিপ্রতিপত্তি দেখিতে পাওয়া যায় না; সুতরাং,প্রমাণ প্রদর্শন অনাবশ্যক, এই সংস্কার বশতঃ তাহা করি নাই। বস্তুতঃ, আমি সিদ্ধ বিষয়ের নির্দ্দেশ করিয়াছি; সাধ্য নির্দ্দেশ করি নাই। সিদ্ধ বিষয়ের নির্দ্দেশ যেরূপে করিতে হয়, তাহাই করিয়াছি। যথা,

 “যে সমস্ত বিধি প্রদর্শিত হইল, তদনুসারে বিবাহ ত্রিবিধ নিত্য, নৈমিত্তিক, কাম্য। প্রথম বিধি অনুসারে যে বিবাহ করিতে হয়, তাহা নিত্য বিবাহ; এই বিবাহ না করিলে, মনুষ্য গৃহস্থাশ্রমে অধিকারী হইতে পারে না। দ্বিতীয় বিধি অনুযায়ী বিবাহও নিত্য বিবাহ; তাহা না করিলে আশ্রমভ্রংশনিবন্ধন পাতকগ্রস্ত হইতে হয় (৫৩)।”

 “পুত্রলাভ ও ধর্ম্মকার্য্যসাধন গৃহস্থাশ্রমের উদ্দেশ্য। দারপরিগ্রহ ব্যতিরেকে এই উভয়ই সম্পন্ন হয় না; এই নিমিত্ত, প্রথম বিধিতে দারপরিগ্রহ গৃহস্থাশ্রমপ্রবেশের দ্বারস্বরূপ ও গৃহস্থাশ্রমসমাধানের অপরিহার্য্য উপায়স্বরূপ নির্দিষ্ট হইয়াছে। গৃহস্থাশ্রমসম্পাদনকালে স্ত্রীবিয়োগ ঘটিলে, যদি পুনরায় বিবাহ না করে, তবে সেই দারবিরহিত ব্যক্তি আশ্রমভ্রংশনিবন্ধন পাতকগ্রস্ত হয়; এজন্য, ঐ অবস্থায় গৃহস্থ ব্যক্তির পক্ষে পুনরায় দারপরিগ্রহের অবশ্যকর্ত্তব্যতাবোধনার্থে, শাস্ত্রকারেরা দ্বিতীয় বিধি প্রদান করিয়াছেন (৫৩)[১]।”

 ধর্ম্মার্থ বিবাহের নিত্যত্ব সিদ্ধ বিষয় বলিয়া, প্রমাণ প্রদর্শন করি নাই বটে; কিন্তু যাহা নির্দ্দেশ করিয়াছি, তাহাতে তদ্বিষয়ক সমস্ত প্রমাণের সার সংগৃহীত হইয়াছে। তর্কবাচস্পতি মহাশয়, ধর্ম্মশাস্ত্র-

  1. (৫৩)বহুবিবাহ, প্রথম পুস্তক, ৭ পৃষ্ঠা।