পাতা:বাঁশরী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ক্ষিতীশ

 আচ্ছা, বোঝা গেল সন্ন্যাসীকে ভালোবাসে ঐ সুষমা। তার পরে?

বাঁশরী

 সে কী ভালোবাসা! মরণের বাড়া! সংকোচ ছিল না কেননা একে সে ভক্তি বলেই জানত। পুরন্দর দূরে যেত আপন কাজে, সুষমা তখন যেত শুকিয়ে, মুখ হয়ে যেত ফ্যাকাসে। চোখে প্রকাশ পেত জ্বালা, মন শূন্যে শূন্যে খুঁজে বেড়াত কার দর্শন। বিষম ভাবনা হল মায়ের মনে। একদিন আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘বাঁশি, কী করি?’ আমার বুদ্ধির উপর তখন তাঁর ভরসা ছিল। আমি বললেম, ‘দাও-না পুরন্দরের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে।’ তিনি তো আঁৎকে উঠলেন। বললেন, ‘এমন কথা ভাবতেও পার?’ তখন নিজেই গেলুম পুরন্দরের কাছে। সোজা বললুম, ‘নিশ্চয়ই জানেন, সুষমা আপনাকে ভালোবাসে। ওকে বিয়ে করে উদ্ধার করুন বিপদ থেকে। এমন করে মানুষটা তাকাল আমার মুখের দিকে, রক্ত জল হয়ে গেল। গম্ভীর সুরে বললে, ‘সুষমা আমার ছাত্রী, তার ভার আমার ’পরে, আর আমার ভার তোমার ‘পরে নয়।’ পুরুষের কাছ থেকে এতবড় ধাক্কা জীবনে এই প্রথম। ধারণা ছিল সব পুরুষের ’পরেই সব মেয়ের আব্দার চলে, যদি নিঃসংকোচ

৫০